শ্রীনগরে জলাবদ্ধতায় আলু চাষীরা দিশেহারা
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৪২ পিএম, ৮ই ডিসেম্বর ২০২৩

শ্রীনগরে ২১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা মাঠে কাজ শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাত থেকে ঝূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এ বৃষ্টি ভাড়ি বর্ষণে পরিনত হলে আলুবীজ বপণকৃত জমিতে পানি জমতে শুরু করে। উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের বীরতারা, আটপাড়া, তন্তর, কুকুটিয়া ও ষোলঘর ইউনিয়নের খৈয়াগাঁও-পুর্ব দেউলভোগ চকে বপণকৃত আলুর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে আলু চাষীদের স্বপ্ন ভঙ্গ হতে শুরু করে। এই জলাবদ্ধতায় আলু জমির ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মুন্সিগঞ্জে জমিতে আলুর বীজ বপণ শুরু
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধ আলু জমির পানি নিস্কাশনের চেষ্টা করছেন ভুক্তভোগী আলু চাষীরা। এদিন দুপুরে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়লে দিশেহারা হয়ে উঠেন তারা।
লক্ষ্য করা যায়, জমিতে সবে মাত্র আলুবীজ বপণ সম্পন্ন হয়েছিল। জমিতে এখনও আলুর চারা গজায়নি। স্থানীয়রা বলেন, জলাবদ্ধতায় জমিতে আলু চারা গজানোর কোন সম্ভাবনা নেই। বপণকৃত বীজ সব পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
কুকুটিয়ার আলম হোসেন বলেন, ৪ দিন হয় জমিতে বীজআলু বপণ করি। বৃষ্টিতে প্রায় ২ কানি আলুর জমি (কানি প্রতি ১৪০ শতাংশ) নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৩৫ হেক্টর জমির আমান ক্ষেত নষ্ট
তন্তর এলাকার কৃষক রিপন জানান, জমি চাষ করে প্রস্তুত করি। বীজ বপণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বৃষ্টিতে সব শেষ। আবার ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ দিতে হবে। এতে প্রতি কানি জমি ফের চাষ খরচ পড়বে ১৫-১৮ হাজার টাকা। এছাড়া অতিরিক্ত সার ও শ্রমিক মজুরীসহ অন্যান্য খরচতো থাকছেই।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, গত বছর উপজেলায় ১৮০০ হেক্টর জমিতে আলুর উৎপাদণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬২ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন। আলুর বাজার পাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে এচাষে আগ্রহ বাড়ে। তবে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ও চলমান মিগজাউম’র প্রভাবে আলু চাষের ভরা মৌসুমে কৃষকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হলো। ক্ষতির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে আলু চাষীরা দিশেহারা উঠেছেন।
এই পরিস্থিতিতে প্রতি কানি আলু চাষে সর্বমোট খরচ পড়বে আড়াই লাখ টাকার ওপরে। সেই সাথে আলু চাষে বিড়ম্বনার শিকার হবেন তারা।
শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোহসিনা জাহান তোরণ জানান, উপজেলায় ৬৬০ হেক্টর জমিতে বীজআলু বপণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ঝূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। শঙ্কা করা হচ্ছে। জলাবদ্ধ আলু জমিতে পানি নিস্কাশনের জন্য নালা তৈরির জন্য বলা হচ্ছে। বৃষ্টি থামলে সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরমর্শ দেওয়া হবে।
আরএক্স/