ফুলবাড়ীতে বন্যায় ১৩৫ হেক্টর জমির আমান ক্ষেত নষ্ট


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:১৬ অপরাহ্ন, ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৩


ফুলবাড়ীতে বন্যায় ১৩৫ হেক্টর জমির আমান ক্ষেত নষ্ট
জলাবদ্ধতার কারনে রোপা আমন ক্ষেত তছনছ

বানের পানিত মোর ধানের গাছ গুলা সোগ শেষ হইল বাহে ভত্তা বানে গেইল । সোগ গাছ সুতি গ্যাইছে,এ্যালা জমি  থাকি গাছ উঠে না। অসময় এ্যালা বিছন কোন্টে পাং বাহে । মুই সেই চিন্তায় বাচং না বাহে। আঞ্চলিক ভাষায় কথা গুলো বলেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের বাসিন্দার আব্দুল মজিদ মিয়া। 


শুধু মজিদ মিয়া নয় তিন দফা বন্যায় ফুলবাড়ী উপজেলায় কৃষকের রোপা আমান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে তিনশ পয়ত্রিশ হেক্টর। নতুন বিজতলা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষক।


কয়েক দফা বন্যা হওয়ায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় জলাবদ্ধতার কারনে রোপা আমন ক্ষেত তছনছ হয়ে পড়েছে নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে লোকালয়ে জমিতে পানি চলে যায়। পানির সাথে বিপুল পরিমাণ বালুও চলে আসে। ওই সব জমির পানি নিস্কাশনের অভাবে লাগানো রোপা আমানের ক্ষেত গুলো ডুবে যায়। দীর্ঘ দিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকায় কৃষকের আমান ক্ষেত পঁচে নষ্ট হয়েছে। সে কারনে ক্ষতিগুলো পুঞ্জিভূত হওয়ায় কৃষকের হৃদয়ে আঁচড় কাটছে সারাক্ষণ।


তা ছাড়াও ধরলার তীরবর্তী জমির আমান ক্ষেত বালু নিচে রয়েছে । দীর্ঘ দিন ধরে এ অবস্থায় থাকায় চরম হতাশায় পড়েছেন কৃষক। অন্য দিকে উপজেলার বেশ কিছু মৌজার জমি নিম্ন অঞ্চলে পড়েছে । 


সে সব জমি জলাবদ্ধতার কারনে রোপা আমন ক্ষেত তছনছ হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে থাকায় নষ্ট ক্ষেত গুলো ভেঙ্গে নতুন করে লাগানোর পরিকল্পনা থাকলেও বীজতলা অভাবে চরম চিন্তায় পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক। ফলে আমান চাষাবাদের ফসল ঘরে উঠবে কি না তা নিয়ে অনেকেই আশংকায় ভোগচ্ছেন।


ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নাও খেলার দোলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইউসুফ আলী ও খলিল মিয়া জানান সম্প্রতি সময়ের বন্যা পানিতে ডুবে গিয়ে দেড় বিঘা করে জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। একই কথা বলেন ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চিনাবাড়ী এলাকার লাল মিয়া ও চাঁদ মিয়া ।তাঁরা বলেন নতুন বিজ তলার অভাবে ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে নতুন করে ধান লাগানো নিয়ে বিপাকে পড়েছি। যদিও দু-একজনের বীজ পাওয়া যাচ্ছে তাও দামে চড়া । অসময় আবার আমানের ক্ষেত লাগাবো কি না তা নিয়ে চিন্তা করছি।


বড়ভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন , কয়েক দফা বন্যায় সবচেয়ে বড়ভিটা ইউনিয়নে বেশি আবাদী জমির ক্ষতি হয়েছে। যেখানে সেখানে মাটি উঁচু করে ঘরবাড়ি করায় জলাবদ্ধতা বেশি হয়েছে। সে কারনে দোলা জমির পানি বের হতে পাচ্ছে না। তবে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।


ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান উপজেলায় চলতি মৌসমে ১১হাজার ৪৩০ হেক্টও জমিতে আমান ক্ষেত লাগানো হয়েছে। তার মধ্যে বন্যায় ১৩৫ হেক্টর জমির আমান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি গুলো পতিত না রেখে নতুন করে ক্ষেত লাগানোর জন্য কৃষকদেরকে পরামার্শ দেয়া হচ্ছে।


আরএক্স/