খাজা শেখ সাচী মুহাম্মদ নক্সবন্দি (রহঃ)
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মৌলানা মীর মঈনুদ্দীন নুরী ছিদ্দীকি আল কুরাইশি: (১৭১৫ খৃ- ১৭৮০ খৃ)১৭ শতকের ইসলাম প্রচারের অগ্রপথিক হযরত শেখ সাচী মুহাম্মদ নক্সবন্দি (রহঃ) খলিফাতুর রাসুল (দঃ) হযরত সৈয়দীনা আবু বকর ছিদ্দীক (রাঃ) এর বংশে হযরত শেখ বসীর মাহমুদ খাঁ প্রকাশ শাহ্ মনোহর (রহঃ) এর ঘরে ষোল’শ খ্রীস্টাব্দের শেষের দিকে ভূমিষ্ট হন। তাঁহার পূর্ব পুরুষ মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (রাঃ) এর অধস্তন পুরুষ হযরত শেখ মীনা মুহাম্মদ খাঁ আল নক্সবন্দি (রাঃ) পনেরশত খ্রীস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ইয়ামেন হতে কৌনিয়া হয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদে আগমন করেন। ইসলাম প্রচার ও দ্বীন-ই- ইলাহীর ফেতনা সম্পর্কে অবগত করতে খানকায়ে নক্সবন্দিয়ায়ে ছিদ্দীকীয়ায়ে মৌলভীয়ায়ে তিবরে জিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন। পূর্ব-পুরুষের ধারা মতে সকলই উক্ত খান্কা ও তরিকায় ইসলাম প্রচারের কাজে মনোনিবেশ করেন। তাঁরই ধারামতে শেখ বচীর মুহাম্মদ খাঁ (রাঃ) আরাকান রাজ্যে ইসলাম প্রচারের খেদমতে আনজাম দেন।
নবাব খাঁন বাহাদুর তাহার হাতে বায়াত গ্রহণ করে পীরতত্ত্ব, নিষ্কর সম্পত্তি হিসাবে আট কুড়ি দৌণ (১৬০ দৌণ) পরগনাভূমি তরফদারি উপহার দেন।
যাহা একমাত্র পুত্র হিসাবে শেখ সাচী মুহাম্মদ খাঁ লাভ করেন। এই ব্যাপারে শাহ আলী রজা কানুশাহ্ (রঃ) লিখেন:
প্রভূর কৃপায় রূপে গুণে ধীর,
সাহাস বিএম বড় সিংহের শরীর,
প্রভূর কৃপায় তান শুদ্ধ ভাব চিত,
বৃত্তিভূমি অর্জি সুখে ছিল পৃথিবিত।
তিনি বৌদ্ধ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদেরকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় এনে তাহাদের মধ্যে ঐ সম্পত্তি হতে ৮০ দৌণ সম্পত্তি দান করেন। শেখ আলী রজা কানুশাহ্ (রঃ) লিখেন:
যাহার সেবক থাকে প্রেম মান্য অতি,
সাধক জাতি লোকের সঙ্গে আছিল পিরিতি।
দুক্ষিতা জনেরে দয়া অতি ছিল মনে,
বিরিষ না ছিল তার পরশির সনে।
তিনি কোমল প্রকৃতির ছিলেন। কোরআন, হাদিস ও ফিকাহর বিষয়ে বিজ্ঞ ছিলেন। প্রায় সময় ওয়াজ-নসিহত পেশ করতেন। শেখ সুফী আলী রজা কানু শাহ্ (রঃ) লিখেন:
নিষ্পাপ শরীর শুদ্ধ খেমা শান্তি মতি
প্রভূর কৃপায় বলে পুণ্য কর্ম্মে মতি।
কোরান পড়েন্ত ক্ষেণে প্রভূর কালাম
ক্ষেণে নিতি শাস্ত্র পড়ে ক্ষেণে পৃহকমি।
ধর্ম্ম কথা শুনিবারে আন্নদ সদায়
সাপে ভিত্তি খেমা চিত দিল বিধাতায়।
তাঁহার অসংখ্য ভক্ত, মুরিদ ও খলিফা ছিল। শেখ আলী রজা কানুশাহ্ (রঃ) লিখেন:
প-িত খলিফা বর্গজাকে ব্রহ্মণ
এ সবারে মান্যতা আছিল প্রাণপণ।
তালিব মুরিদ হয়ে শুদ্ধ ছিল মতি
জ্ঞান হিন আলী রজা তাহার সন্ততি।
তিনি খান্দানে নক্সবন্দিয়ার উচ্চ স্তরের পীর ও বুজুর্গ ছিলেন। আউলাদে গাউসে পাক (ক.) খাজা শহীদ আব্দুর রহীম মাগপুরী (রাঃ) এর খলিফা সৈয়দ বংলীয় অগ্নীকন্যা সৈয়্যদা জোবায়দা খানম প্রকাশ মা পরান বিবি (রাঃ) এর সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গন্তব্য জোয়ারে (সবুজগ্রাম) বসতি স্থাপন করেন। তাঁহারা খলিফাদের মধ্যে অলি খাজা সুধন খাজা ও বুঁয়ে খোয়াজা অন্যতম। তাঁহার প্রাণাধিক শিষ্য হযরত বুঁয়ে খোয়াজা (রাঃ) পীরের খেদমতে একটি দিঘী খনন করেন, যা (বেজার ডি) নামে পরিচিত। তাঁহাদের সংসারে জগৎ বিখ্যাত অলিয়ে কামেল তাপসমুকুট সাধক প্রভর আটারো শতকের শ্রেষ্ঠ কবি, পীর সৈয়্যদ আলীরজা কানুশাহ্ (রাঃ) ভূমিষ্ট হন। তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে মাত্র ১৩ বৎসর বয়সে নক্সবন্দিয়া তরিকার খেলাফত ও খিলফা দিয়ে যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে মনোনিত করেন। ১৪৪২ মঘী ২৯ই পৌষ বর্তমান বাংলা ৩ শে পৌষ এই নক্সবন্দিয়া তরিকার মহান ওলী ইন্তিকাল করেন। তাঁহারাই ইচ্ছায় বুঁয়ে খোয়াজার দীঘির পূর্ব পাশে তাঁহাকে দাফন করা হয়। প্রতি বৎসর ৩০ শে পৌষ, ১৩ই জানুয়ারি গাউসিয়া রহমানিয়া মওলা মঞ্জিল, ওষখাইন দরবার শরীফ, আনোয়ারা, চট্টগ্রামে তাঁহার বার্ষিক ফাতেহা ও ওরস শরীফ উদ্যাপিত হয়।
এসএ/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন
বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল
চার দাবিতে ইডেন কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এইটা ডাকসু না, হিজাবসু: নীলা ইসরাফিল