এআই ব্যবহারে কেন পৃথিবীজুড়ে তৈরি হবে পানিসঙ্কট?

আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান: প্রযুক্তির বিস্ময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (Artificial Intelligence) আজ মানুষের জীবনকে সহজ করছে। তবে এর আড়ালে তৈরি হচ্ছে এক ভয়াবহ পরিবেশগত সংকট।
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই-এর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর তৈরির পিছনে পানি খরচ হচ্ছে এমন হারে, যা ভবিষ্যতে বিশ্বের পানিসঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। একটি বড় ভাষা মডেলকে (যেমন ChatGPT) মাত্র ১০ থেকে ২০টি প্রশ্ন করতে যে পরিমাণ পানি খরচ হয়, তা দিয়ে একজন মানুষ একটি বোতল (প্রায় আধা লিটার) পানি পান করতে পারে। অর্থাৎ প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য গড়ে ৩০০–৫০০ মিলিলিটার পানি খরচ হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কাশিমপুরে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর
বিজ্ঞাপন
এই পানি সরাসরি ব্যবহার করা হয় না, বরং এআই চালাতে যে ডেটা সেন্টার প্রয়োজন, সেটি ঠান্ডা রাখতে বিশাল পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয়। বিদ্যুৎচালিত সার্ভারগুলোর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পানি শীতলীকরণ ব্যবস্থা অপরিহার্য। আর এ কারণে প্রতিদিন কোটি কোটি লিটার পানি ব্যয় হচ্ছে, যা একটি জনবহুল শহরের মানুষের দৈনন্দিন পানির চাহিদার সমান।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী-
প্রতি ২০টি এআই প্রশ্নে = অর্ধ লিটার পানি
বিজ্ঞাপন
প্রতি ১,০০০ প্রশ্নে = ২৫ লিটার পানি
বড় মডেল প্রশিক্ষণে লাগে প্রায় মিলিয়ন লিটার পানি
পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসঙ্কটের এই সময়ে এআই ব্যবহারের ফলে পানির ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করতে গিয়ে মানবজাতিকে ভয়াবহ পানি সংকটের মুখে পড়তে হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই বিকল্প সমাধান গ্রহণ না করলে এআই প্রযুক্তি মানব সভ্যতার জন্য আশীর্বাদের পাশাপাশি অভিশাপে পরিণত হতে পারে। তারা পরিবেশবান্ধব কুলিং সিস্টেম, পানির পুনঃব্যবহার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দিয়েছেন।
পানি বাঁচাতে হবে এখনই, নইলে প্রযুক্তির অগ্রগতির ছায়াতলে মানবতার জন্য নামবে পানিশূন্যতার অন্ধকার।