যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের নতুন চুক্তি: নিরাপদ হবে নাকি গুরুত্ব হারাবে?

চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য আমেরিকান বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। এই চুক্তির ফলে দেশটিতে টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের মালিকানা ও পরিচালনায় বড় পরিবর্তন আসছে।
বিজ্ঞাপন
প্রশ্ন উঠেছে- এই পরিবর্তনে টিকটক কি আরও নিরাপদ হবে? নাকি ধীরে ধীরে প্রাসঙ্গিকতা হারাবে জনপ্রিয় এই প্ল্যাটফর্ম?
টিকটকের দাবি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ব্যবহারকারী সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটির বেশি। এই বিপুল ব্যবহারকারীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্ল্যাটফর্মটির ‘ফর ইউ’ পেজ। এখানেই মূল ভূমিকা রাখে টিকটকের শক্তিশালী রিকমেন্ডেশন অ্যালগরিদম। ব্যবহারকারীর আচরণ, পছন্দ আর দেখার ইতিহাস বিশ্লেষণ করে এই অ্যালগরিদম কনটেন্ট সাজিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ
বিজ্ঞাপন
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের অ্যালগরিদম পরিচালনা ও লাইসেন্সিংয়ের দায়িত্ব পাবে ওরাকল। নতুন কাঠামোয় এই অ্যালগরিদম মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রশিক্ষিত হবে। বৈশ্বিক তথ্য প্রবাহ কমে আসবে। এখানেই তৈরি হচ্ছে বড় প্রশ্ন।
প্রযুক্তিক সাংবাদিক উইল গায়াট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের টিকটক আন্তর্জাতিক সংস্করণের মতো দ্রুত নতুন ফিচার ও আপডেট পাবে কি না, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। যদি নতুন ফিচার পেতে দেরি হয়, তবে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতায় পার্থক্য তৈরি হতে পারে।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক কোকিল জাইদকা বলেন, টিকটকের জনপ্রিয়তার মূল উপাদান- ছোট ভিডিও, শপিং সুবিধা এসব থাকবেই। তবে অ্যালগরিদম যদি সীমিত ডেটায় কাজ করে, তাহলে ব্যক্তিগতকরণে ধীরগতি আসতে পারে। ভাইরাল ট্রেন্ড ধরতেও সময় বেশি লাগতে পারে।
বিজ্ঞাপন
নতুন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে ওরাকল বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সিলভার লেক এবং আবুধাবিভিত্তিক বিনিয়োগ তহবিল এমজিএক্স। এসব বিনিয়োগকারীর চাপেও কনটেন্ট নীতিতে আরও সংযম আসতে পারে।
ম্যাট নাভারার মতে, আসল পরীক্ষা হবে ব্যবহারকারী সংখ্যা কমে যায় কি না সেটি নয়। প্রশ্ন হলো, টিকটক কি আগের মতোই ইন্টারনেটের পরীক্ষামূলক ও সাহসী জায়গা থাকবে? নাকি এটি হয়ে উঠবে আরও ভদ্র, আরও নিয়ন্ত্রিত এক প্ল্যাটফর্ম?
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। এই অধ্যায় নিরাপত্তা বাড়ালেও, তার বিনিময়ে প্ল্যাটফর্মটির স্বাতন্ত্র্য কতটা বদলে যায়- সেটিইমেনে হয় এখন দেখার বিষয়।







