আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে বিরল সুপারমুন

মধ্যরাতে আকাশপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য—সুপারমুন। এ সময় চাঁদ মূলত নিজের কক্ষপথে আবর্তনের সময় পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে, ফলে চাঁদকে বড় দেখায়। এই বছর পরপর তিনটি সুপারমুন বা আকারে বড় চাঁদ দেখার সুযোগ মিলবে।
বিজ্ঞাপন
প্রথম সুপারমুন দেখা যাবে আজ ৬ অক্টোবর মধ্যরাতে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের আকাশে দেখা মিলবে বিরল সুপারমুন।
যারা আজ রাতে এই মহাজাগতিক সৌন্দর্য দেখতে পারবেন না, তারা হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আগামীকাল ৭ অক্টোবর রাতেও পুনরায় দেখা মিলবে এই হারভেস্ট মুনের। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশের আকাশে দৃশ্যমান হবে এই সুপারমুন বা হারভেস্ট মুন।
আরও পড়ুন: জমকালো আয়োজনে বাজারে এলো ভিভো ভি৬০ লাইট
বিজ্ঞাপন
২০২৫ সালের প্রথম সুপারমুন হিসেবে এটিই বছরের সবচেয়ে বড় ও উজ্জ্বল চাঁদ, যা নভেম্বর ২০২৪-এর পর আবার দেখা যাচ্ছে। এই মহাজাগতিক ঘটনা তিনটি পরপর সুপারমুনের শুরু হিসেবে চিহ্নিত হবে, যা ২০২৫ সালের শেষ তিন মাসে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
সুপারমুন কী?
চাঁদের কক্ষপথ পুরোপুরি বৃত্তাকার নয়, বরং এটি দ্বন্দ্বাকার (elliptical)। ফলে চাঁদ ও পৃথিবীর দূরত্ব বছরে বিভিন্ন সময় ভিন্ন হয়। যখন পূর্ণিমা চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকে—যাকে পেরিজি (perigee) বলা হয়—তখন তাকে সুপারমুন বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
সুপারমুন সাধারণ পূর্ণিমার তুলনায় ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল দেখায়। প্রথমবার এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন ১৯৭৯ সালে জ্যোতিষী রিচার্ড নোল।
হারভেস্ট মুন কী?
হারভেস্ট মুন হলো সেই পূর্ণিমা যা শরৎ বিষুব সংক্রান্তির সময় উদিত হয়। প্রাচীনকালে কৃষকরা এই চাঁদের আলোতে রাতেও মাঠে কাজ করতেন। অক্টোবরের পূর্ণিমাকে সাধারণত হারভেস্ট মুন বলা হয়।
বিজ্ঞাপন
২০২৫ সালে হারভেস্ট মুন ৭ অক্টোবর দেখা যাবে, যা ১৯৮৭ সালের পর সর্বশেষ এই সময়ের হারভেস্ট মুন।
চাঁদের ভ্রম
চাঁদ কখনো কখনো দিগন্তের কাছে বড় এবং লাল-কমলা দেখায়। এটি চোখের প্রতিক্রিয়ার কারণে বড় মনে হয়, যা Moon Horizon Illusion নামে পরিচিত। এছাড়া, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল নীল আলোকে ছেঁকে দেয় এবং লাল-হলুদ রঙের আলো চাঁদের ওপর পৌঁছায়, তাই দিগন্তের কাছে চাঁদ লাল-কমলা দেখায়।
বিজ্ঞাপন
কোথা থেকে দেখতে পাবেন এই মহাজাগতিক বিরল ঘটনা?
আকাশ পরিষ্কার ও বৃষ্টি না হলে উত্তর গোলার্ধ্ব থেকে সবচেয়ে ভালো দৃশ্যমান হবে ‘হারভেস্ট মুন’। বাংলাদেশ ও ভারত থেকে এই চাঁদ দেখা যাবে। যেখানে বায়ুদূষণ কম, তেমন জায়গা থেকে খুব ভালো দৃশ্য চাক্ষুষ করতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন
এই সুপারমুন ফটোগ্রাফার ও আকাশপ্রেমীদের জন্য এক বিরল সুযোগ। ২০২৫ সালে আরও দুইটি সুপারমুন দেখা যাবে—৫ নভেম্বর এবং ৪ ডিসেম্বর।
৬ ও ৭ অক্টোবরের হারভেস্ট মুন বা সুপারমুন শুধু একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, এটি প্রাচীন কৃষিজীবনের ঐতিহ্যকেও মনে করিয়ে দেয়। উজ্জ্বল এবং বড় চাঁদ রাতের আকাশকে আলোকিত করবে, শনি গ্রহ ও পেগাসাসের বর্গক্ষেত্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে আকাশপ্রেমীদের জন্য এক অবিস্মরণীয় দৃশ্য তৈরি করবে।