তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের পেছনে এনার্জি ড্রিংক, যা বলছেন কার্ডিওলজিস্টেরা

মাত্র ২০ বা ৩০ বছর বয়সের তরুণ-তরুণীরাই হঠাৎ করেই হার্ট ফেইলিউরের সমস্যায় ভুগছেন। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে এনার্জি ড্রিংকের নাম। এমনটাই জানিয়েছেন বিখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট ডা. দিমিত্রি ইয়ারানোভ, যিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত ‘হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট ডাক’ নামে।
সূত্র থেকে জানা যায় ডা.ইয়ারানোভ নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে হার্ট ফেইলিউরের প্রসঙ্গে কথা বলেন। বিশেষ করে তিনি তরুণদের মধ্যে হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করেন। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, আপনি কি মনে করেন এনার্জি ড্রিংকস শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না? কিংবা কখনও মাত্র এক ক্যান খাওয়ার পর হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে দেখেছেন?
তিনি আরও জানান, প্রায় সময় তার কাছে এমন অনেক রুগি আসেন যারা হার্ট ফেইলিউরের কিছু সময় আগে এনার্জি ডিংকস পান করেন। বর্তমানে এনার্জি ড্রিংকের প্রতি বেশি আসক্ত তরুণরা। এমন কি অনেকে ৩ থেকে ৪ টি ক্যান খান ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে। আর এতেই বাড়ছে হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি। অথচ তাদের ধূমপানের ইতিহাস নেই, পারিবারিকভাবে হার্টের সমস্যা নেই।
ডা. ইয়ারানোভ বলেন, উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন ও অন্যান্য উত্তেজক উপাদান হার্টকে ‘ওভারড্রাইভ’-এ চালায়। এতে রক্তচাপ বেড়ে যায়, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে হার্টের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। আপনার হৃদপিণ্ড সারাদিন সর্বোচ্চ গতিতে চলার জন্য তৈরি হয়নি। তিনি আরও জানান, ভয়াবহ দিক হলো অধিকাংশ ভুক্তভোগী তরুণ মনে করছিলেন তারা একদমই সুস্থ। কিন্তু হঠাৎ করেই ধরা পড়ছে গুরুতর হার্ট ফেইলিউর রোগ।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ২০২৫ সালের ২৭ জুন, দিল্লির সিকে বিরলা হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জীব কুমার গুপ্ত বলেন, এনার্জি ড্রিংকে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন ও চিনি থাকে, যা হৃদস্পন্দন বাড়ায়, রক্তচাপ বৃদ্ধি করে এবং উদ্বেগ ও ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এগুলো হার্টের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে এবং অ্যারিদমিয়া বা অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তিনি পরামর্শ দেন, মানসিক সতেজতা পাওয়ার জন্য এনার্জি ড্রিংকের বদলে পানি বা প্রাকৃতিক ফলের রসের মতো স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নেয়া উচিত।
চিকিৎসকদের মতে, এনার্জি ড্রিংকের সাময়িক এনার্জি বা মানসিক উচ্ছ্বাস আসলে বিভ্রান্তিকর। এর পেছনে যে শারীরিক চাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি লুকিয়ে থাকে, তা দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ হতে পারে। তাই তরুণ প্রজন্মকে এখনই এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বিজ্ঞাপন