কনসিভ হওয়ার আগে যা জানা জরুরি

সন্তান নেওয়া দাম্পত্য জীবনের আনন্দের মুহূর্ত হলেও এটি এক ধরনের দীর্ঘমেয়াদি দায়বদ্ধ সিদ্ধান্ত। শুধু সামাজিক বা পারিবারিক চাপে নয়, স্বাভাবিকভাবে মানসিক প্রস্তুতি, স্বাস্থ্য ও বাস্তবতা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অপরিকল্পিতভাবে সন্তান নেওয়া ভবিষ্যতে সম্পর্ক ও মানসিক চাপকে প্রভাবিত করতে পারে।
বিজ্ঞাপন
নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো, যা বাবা-মা হওয়ার আগে গভীরভাবে বিবেচনা করা উচিত:
১. সম্পর্কের স্থিতিশীলতা
অনেক দম্পতি মনে করেন সন্তান এলে দাম্পত্য জীবনের দূরত্ব কমে যাবে। এটি ভুল ধারণা। সম্পর্কের মধ্যে যদি বিরোধ, দূরত্ব বা বোঝাপড়ার ঘাটতি থাকে, তবে সন্তান লালন-পালনের চাপ সম্পর্ককে আরও দুর্বল করতে পারে। তাই বিশ্বাস ও মানসিক সমর্থন আছে কি না তা যাচাই করা জরুরি।
বিজ্ঞাপন
২. চাপমুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ
সন্তান নেওয়া শুধুমাত্র পরিবারের, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের চাপে হলে পরে অনুশোচনা দেখা দিতে পারে। সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত দুইজনের মানসিক প্রস্তুতি ও ইচ্ছার ভিত্তিতে। একই দৃষ্টিকোণ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে শুরুটা হয় স্বস্তিদায়ক ও স্থিতিশীল।
বিজ্ঞাপন
৩. শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত প্রস্তুতি
গর্ভধারণের আগে নারী ও পুরুষ উভয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন ও চিকিৎসা শুরু করা উচিত। এর ফলে গর্ভধারণ, গর্ভকালীন স্বাস্থ্য এবং শিশুর জন্মকালীন ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
৪. আর্থিক স্থিতি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
বিজ্ঞাপন
সন্তানের লালন-পালন এক দিনের বা কয়েক মাসের বিষয় নয়। এটি শিক্ষা, চিকিৎসা, দৈনন্দিন প্রয়োজন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত। তাই বর্তমান আয়-ব্যয় এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। অর্থনৈতিক প্রস্তুতি না থাকলে মানসিক চাপ ও সম্পর্কের সমস্যা বাড়তে পারে।
৫. কাজ ও দায়িত্ব ভাগাভাগি
আজকাল বেশিরভাগ দম্পতিই কর্মজীবী। সেই ক্ষেত্রে সন্তানের দেখাশোনার দায়িত্ব কিভাবে ভাগ করা হবে তা পরিকল্পনা করা গুরুত্বপূর্ণ। আত্মীয়স্বজনের সহায়তা পাওয়া যাবে কি না বা ডে-কেয়ারের প্রয়োজন হবে কি না, এসব আগেভাগে আলোচনা করা উচিত। দায়িত্ব ভাগাভাগি না থাকলে পরে বিরোধ ও দোষারোপের সম্ভাবনা থাকে।
বিজ্ঞাপন
সন্তান জন্মানো শুধু শুরু; তাকে মানুষ করে তোলা আজীবন প্রতিশ্রুতি। তাই মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক প্রস্তুতি যাচাই করে, দু’জনের সম্মতিতে এবং পরিণত চিন্তা-ভাবনা করে নতুন অধ্যায় শুরু করা উচিত।
সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল মনোভাব ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করলে পরিবারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে, এবং সন্তান বড় হওয়ার পরিবেশ নিরাপদ ও সমৃদ্ধ হয়।








