৯৭ দিন হাসপাতালে ৩৬ বার অপারেশন শেষে বাড়ি ফিরল নাভিদ

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হওয়া ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী নাভিদ নেওয়াজ ৯৭ দিন চিকিৎসা শেষে অবশেষে বাড়ি ফিরেছে।
বিজ্ঞাপন
নাভিদ স্কুলের ইংলিশ ভার্সনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীন জানান, এই ৯৭ দিনের চিকিৎসা সময়ে নাভিদকে মোট ৩৬ বার অপারেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে সে ২২ দিন আইসিইউ, ৩৫ দিন এইচডিইউ এবং ৪০ দিন আইসোলেটেড কেবিনে ছিল।
বিজ্ঞাপন
ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, ২১ জুলাই একটি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার সময় নাভিদ দগ্ধ হয়। শুরুতে তাকে নেওয়া হয়েছিল সিএমএইচে, পরদিন ৪৫ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। ফুসফুসে পানি জমা হলে ফুসফুস কাজ বন্ধ করে, তখন আমরা তাকে উপুড় করে শুইয়ে চিকিৎসা করেছি। মুখে বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পরিয়ে চিকিৎসা করা খুবই কঠিন কাজ। অনেককেই আমরা বাঁচাতে পারিনি, তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
ডা. নাসির উদ্দীন আরও জানান, বর্তমানে হাসপাতালে আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন এবং আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে সকলকে ছাড়া যাবে।
উল্লেখ্য, ২১ জুলাই দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের ওপর আছড়ে পড়ে। দুর্ঘটনার ফলে মুহূর্তেই আগুন লাগে এবং ভবনের একটি অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং বিমানের পাইলটসহ বহু হতাহত হন। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ৩১ থেকে ৩৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
বিজ্ঞাপন
সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিহত পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে জনবহুল এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন, যাতে প্রাণহানি কম হয়। এই ঘটনায় সরকার একদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছিল।
নাভিদের সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা এই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা ও চিকিৎসার চ্যালেঞ্জের মাঝে এক মর্মস্পর্শী আশার গল্প হয়ে উঠেছে।








