Logo

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জলবায়ু–ঝুঁকিপূর্ণ দেশ: বিশ্বব্যাংক

profile picture
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৭
24Shares
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জলবায়ু–ঝুঁকিপূর্ণ দেশ: বিশ্বব্যাংক
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু–ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল, যার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে সতর্কভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ চরম তাপমাত্রা ও অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিতে পড়বে, এবং এক চতুর্থাংশ মানুষ গুরুতর বন্যার প্রভাবে বিপদগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় পানি ও মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে।

বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ অ্যান্ড আদার সাউথ এশিয়ান কান্ট্রিজ ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স উইল বি প্রাইভেট সেক্টর লেড’ শীর্ষক সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মূল চাপ পরিবার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়ছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ পরিবার ও প্রতিষ্ঠান আগামী ১০ বছরের মধ্যে কোনো না কোনো আবহাওজনিত ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ পরিবার ও ৬৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে এদের অধিকাংশই সাধারণ ও কম খরচের সমাধান।

বাংলাদেশের উপকূলীয় ২৫০টি গ্রামের জরিপে দেখা গেছে, জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামোর অভাব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ৫৭ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে, দুর্যোগ–সুরক্ষা অবকাঠামোর ঘাটতি তাদের প্রধান সমস্যা। আর ৫৬ শতাংশ পরিবার বলেছে, অভিযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সক্ষমতা তাদের নেই।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সংকট শুধুই পরিবেশগত নয়, মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িত; বিশেষ করে দরিদ্র ও কৃষিভিত্তিক পরিবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংক জানায়, বাঁধ ও সাইক্লোন শেল্টারসহ সরকারি বিনিয়োগ মানুষের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করছে, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও তথ্যের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব। তবে রাজস্ব সীমাবদ্ধতার কারণে সরকার সবসময় পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিতে পারছে না। তাই বেসরকারি খাতকে অভিযোজন কাজে সম্পৃক্ত করতে নীতিগত সমাধান জরুরি।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিভাগের পরিচালক জ্যঁ পেসমে বলেন, বাংলাদেশের স্থিতিস্থাপকতা প্রতিনিয়ত নতুন পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। অভিযোজন ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে হচ্ছে, কিন্তু জলবায়ু ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। তাই আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা, জলবায়ু–স্মার্ট কৃষি, অভিযোজন অর্থায়ন ও নগর এলাকার লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহুস্তরীয় ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন অপরিহার্য। আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা উন্নত করা, আনুষ্ঠানিক ঋণ ও বীমা প্রসারিত করা, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ উৎসাহিত করা—এসবই জলবায়ু–সম্পর্কিত ক্ষতির এক-তৃতীয়াংশ কমাতে সহায়ক। সীমিত বাজেটেও পরিবহন ও ডিজিটাল নেটওয়ার্ক উন্নত করা এবং লক্ষ্যভিত্তিক সামাজিক সহায়তা জোরদার করে স্থানীয় অভিযোজন কার্যকর করা সম্ভব।

প্রতিবেদনের সহ–লেখক সিদ্ধার্থ শর্মা বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা শিক্ষণীয়। মানুষ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই অভিযোজন করছে, কিন্তু সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সংকট মোকাবিলা করা কঠিন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংক আশা করছে, লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগ, নতুন প্রযুক্তি–নির্ভর সমাধান, সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুত স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করতে পারবে। এতে শুধু দুর্বলতা কমবে না, দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উন্নয়নও নিশ্চিত হবে।

জেবি/এএস
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD