নাজাতের দশকে যে সব আমল বেশি বেশি করবেন


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭:১২ অপরাহ্ন, ২রা এপ্রিল ২০২৪


নাজাতের দশকে যে সব আমল বেশি বেশি করবেন
প্রতিকি ছবি

আজ ২১ রমজান। নাজাতের দশকের শুরু হয়ে গেল। নাজাত মানে হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া। এই দশ দিনে মহান আল্লাহতায়ালা অসংখ্য জাহান্নামিকে মুক্তি দেবেন। সেইসব নাজাতপ্রাপ্তদের কাতারে আমরাও যেন শামিল হতে পারি, তার জন্যে আমাদের বিশেষ কিছু নেক আমল করতে হবে। তেমনই কিছু আমল প্রিয় নবী (সা.) শিখিয়ে গেছেন। হাদিসে এসেছে, নবীজি রমজানের শেষ দশককে খুবই গুরুত্ব দিতেন। একটি মুহূর্তও যেন অবহেলায় নষ্ট না হয়, এ জন্য সাহাবায়ে কেরামদের বিশেষ হুঁশিয়ার করতেন। বেশি বেশি আমলের তাগিদ দিতেন। আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, যখন মাহে রমজানের শেষ দশক আসত, তখন রাসুল (সা.) তার কোমর কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদত বোঝানো হয়েছে) এবং রাতে বেশিরভাগ সময় জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (বোখারি, হাদিস ১৮৯৭, মুসলিম, হাদিস ২৬৫৮)


মাহে রমজানের শেষ দশকে নবীজি (সা.) যেসব আমল বেশি বেশি করতেন, সেগুলো হলো—


লাইলাতুল কদরের তালাশ: লাইলাতুল কদর হলো ওই পবিত্র রাত, যে রাত হাজার মাস অপেক্ষা বেশি উত্তম। এক হাজার মাস হলো ৮৪ বছর ৪ মাস। এই এক রাতের ইবাদত-বন্দেগি ৮৪ বছর ৪ মাসের ইবাদত-বন্দেগির সমান। তাই এমন সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়? তবে এই রাত নির্ধারিত নয়। রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর কোনো এক রাতে লাইলাতুল কদর হবে। তাই নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের তালাশ করো।’ (বোখারি, হাদিস ২০১৭), বিশেষ করে আমাদের ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এই পাঁচটি রাত ইবাদত-বন্দেগি করে অতিবাহিত করা উচিত।


আরও পড়ুন: যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়


তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা: তাহাজ্জুদ নামাজ হলো বান্দা ও রবের সেতুবন্ধন। বছরের অন্যান্য সময়ে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া না হলেও রমজানে পড়ার সুযোগ বেশি হয়। সেহরির আগে পরে মাত্র ১০ মিনিটেই এই ফজিলতপূর্ণ আমলটি করা যায়। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, এমন সুযোগ থাকার পরও আমরা অনেকেই তাহাজ্জুদ পড়ি না। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কিয়ামুল্লাইল (তাহাজ্জুদ নামাজ)-এর প্রতি যত্নবান হও। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তী নেককারদের অভ্যাস এবং রবের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। আর তা পাপরাশী মোচনকারী এবং গুনাহ থেকে বাধা প্রদানকারী।’ (তিরমিজি, হাদিস ৩৫৪৯)


তওবা-ইস্তেগফার করা: মানুষ তো গোনাহের পুতুল। শয়তানের দীর্ঘ প্রচেষ্টা, প্রবঞ্চনায় প্রতারিত হয়ে মুমিন যদি গোনাহর কাজে জড়িয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করতে হবে। তওবা এমনই এক পরশপাথর, যার মাধ্যমে মহাপাপীও গুনাহমুক্ত হয়ে যায়। হাদিসে এসেছে, ‘গুনাহ থেকে তওবাকারী, গুনাহমুক্ত ব্যক্তির মতো।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫০), আামাদের সবার প্রতিনিয়ত তওবা করা উচিৎ। তওবার দ্বারা বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করেন। বান্দার গুনাহ যদি আকাশচুম্বিও হয়, তওবা করার সাথে সাথে আল্লাহ মাফ করে দেন। এ ছাড়া সালাতুত তসবি আদায় করতে পারি এবং বেশি বেশি দোয়া করতে পারি। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে দোয়া করে না, আল্লাহতায়ালা তার ওপর রাগান্বিত হন।’ (তিরমিজি, হাদিস ৩৩৭৩)


ইতেকাফ করা: আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিতে অবস্থান করাকে ইতেকাফ বলে। এটি সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশক ইতেকাফ করতেন। তার ওফাত পর্যন্ত এই নিয়ম ছিল। এরপর তার সহধর্মিণীরা ও (সে দিনগুলোয়) ইতেকাফ করতেন। (বোখারি, হাদিস ১৮৯৯)


এমএল/