দাফনের কাপড়ে মোড়ানো সাংবাদিক শিবলীর স্বপ্ন


Janobani

মো. বাকি বিল্লাহ

প্রকাশ: ১২:৩২ পিএম, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫


দাফনের কাপড়ে মোড়ানো সাংবাদিক শিবলীর স্বপ্ন
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সরাসরি টেলিভিশন রিপোর্টিং করছিলেন তরুণ সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী (৩৮)। লাইভ শেষ করে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন—সেদিন স্ত্রীর কণ্ঠে ছিল একটাই অনুরোধ, “তাড়াতাড়ি ফিরো, আয়াত তোমাকে খুঁজছে।”


কিন্তু আর ফেরা হয়নি শিবলীর। ফিরেছে শুধু নিথর দেহ। কাফনের কাপড়ে মোড়ানো স্বপ্ন, দায়িত্ব আর অগণিত না বলা প্রশ্ন।


মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সরাসরি সম্প্রচারের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শিবলী। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পরদিন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিজ গ্রাম এতবারপুরে দাফন করা হয় তাকে।


শিবলীর চার বছরের মেয়ে আয়াত এখনো বুঝতে পারেনি—বাবা আর কখনো কপালে চুমু দিয়ে ঘুম পাড়াতে আসবেন না। দেড় বছরের ছোট ছেলে আজমি খুঁজে ফেরে সেই বুক, যেখানে তার ঘুম ভাঙত। আর স্ত্রী সোনিয়া—জীবনসঙ্গীহীন ঘরজুড়ে এখন কেবল শূন্যতা আর নিঃশব্দ কান্না।


শোকাহত বাবা এ কে এম সাহেবুল্লাহ ও মা আমাতুল গাউস বলেছেন, “ঢাকায় আর ফিরব না, ছেলের কবরের পাশেই থাকব।”


সাংবাদিক সহকর্মীরা বলছেন, দায়িত্বশীল ও নিবেদিতপ্রাণ মানুষ ছিলেন শিবলী। তার মৃত্যু শুধু পরিবারকেই নয়, পুরো সাংবাদিক সমাজকেই স্তব্ধ করেছে।


প্রশ্ন উঠছে—একজন সাংবাদিক, যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সামনে সত্য তুলে ধরেন, তার জন্য কি আমরা দিতে পারি না অন্তত ন্যূনতম নিরাপত্তা? সাংবাদিকতার আলো কি সবসময় নিঃশব্দে নিভে যাবে এভাবেই?


আরএক্স/