রাস্তার দু’ধাঁরে মাশকালাই চাষ, বাড়তি আয়ে খুশি ভূমিহীন কৃষকরা

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের চন্দিজান গ্রামে এখন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। রাস্তার দু’পাশ জুড়ে যতদূর চোখ যায়, দিগন্তজুড়ে ছড়িয়ে আছে মাশকালাইয়ের সবুজ সমারোহ। সোনালি ফুলে রঙিন সেই দৃশ্য যেন প্রকৃতির কোলে নতুন জীবনের গল্প বলে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে বুধবার (১৪ অক্টোবর) দেখা গেছে, দীর্ঘদিন অনাবাদি থাকা রাস্তার পাশের জমি এখন রূপ নিয়েছে ফসলের ক্ষেতে। ভূমিহীন ও প্রান্তিক কৃষকরা এসব পতিত জমিতে বুনেছেন মাশকালাইয়ের বীজ। সেচ লাগে না, সার লাগে না অথচ ফলন দিচ্ছে দারুণ। সামান্য পরিশ্রমে এখন তারা ঘরে তুলছেন বাড়তি ফসল ও আয়ের নিশ্চয়তা।
আরও পড়ুন: আলীকদমে আখ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল
কৃষক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “আগে এই জায়গাগুলো ফাঁকা পড়ে থাকত। এখন মাশকালাই বুনে ভালো ফলন পাচ্ছি। খরচ কম, আয় ভালো তাই এটা খুব লাভজনক।”
বিজ্ঞাপন
কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, “পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করি। এতে সংসারে আসে স্বস্তি ও বাড়তি আয়।”
আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই চাষে কোনো সেচ লাগে না, সারও না। বৃষ্টির পানিতে ফসল বেড়ে ওঠে। খরচ নেই বললেই চলে, তাই আমাদের মতো গরিব কৃষকদের জন্য এটা আশীর্বাদ।”
বিজ্ঞাপন
কৃষিবিদরা জানান, মাশকালাই চাষের জন্য জমিতে ‘জো’ বা পর্যাপ্ত আর্দ্রতা থাকা জরুরি। আগস্টের শেষ থেকে মধ্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টা সবচেয়ে উপযুক্ত। বৃষ্টিনির্ভর এই মৌসুমে ফসল ভালো হয় এবং ফলনও আশানুরূপ মেলে। জাতভেদে প্রতি হেক্টরে ফলন পাওয়া যায় ১.০ থেকে ১.৬ টন পর্যন্ত ।
মাশকালাই ডালে রয়েছে প্রচুর খাদ্যশক্তি ও প্রোটিন, যা মানুষের পুষ্টি ঘাটতি পূরণে সহায়ক। এটি শুধু ডাল হিসেবে নয়, এর খোসা ও গাছ পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রাস্তার পাশের পতিত জমিতে এমনভাবে চাষাবাদ চালু থাকলে যেমন কৃষকরা উপকৃত হবেন, তেমনি বাড়বে এলাকার সবুজায়ন ও ফসল উৎপাদন এবং সৃষ্টি হবে টেকসই কৃষি ব্যবস্থার দৃষ্টান্ত।