বুড়িচংয়ে গ্রীষ্ম ও শীতকালীন আগাম টমেটো চাষে সফল কৃষক মোবারক!

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার অখ্যাত গ্রাম কোরপাই এলাকায় গ্রীস্ম ও আগাম শীতকালীন টমেটো চাষ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন কৃষক মোবারক। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে দু প্রকারের চাষাবাদ করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে তিনি মৌলভীবাজার থেকে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞ কিছু শ্রমিক এনে গ্রীষ্ম ও ভারত থেকে আনা বীজে আগাম শীতকালীন টমেটো চাষের সাথে চারা বিক্রি করাও শুরু করেছেন।
বিজ্ঞাপন
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কোরপাই গ্রাম। এই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোবারক হোসেন। তিনি জানান, পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আমদানী করে টমেটো বাজারজাত করণ দেখে তার এই আগ্রহী। এ অবস্থায় প্রথমে মৌলভীবাজার জেলা থেকে গ্রাটিং পদ্ধতিতে করা গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চারা সংগ্রহ করেন। কিছুদিন পরে মৌলভীবাজার থেকে গ্রাফটিংয়ে পারদর্শী ১০জন কৃষককে নিজ এলাকায় নিয়ে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেন।
পরবর্তীতে ২০২৪ সালে ভারত থেকে আগাম শীতকালীন টমেটোর বীজ এনে সেটার উৎপাদনও শুরু করেন। বর্তমানে কৃষক মোবারকের ফসলী মাঠে সর্বমোট ২০জন শ্রমিক কর্মরত আছেন। সরেজমিন ফসলী মাঠ ঘুরে দেখা যায় প্রায় সাড়ে তিন একর করে প্রতিটি প্লট। বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর জমি থেকে টমেটো সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেখানে ২৫ হাজার গাছ রয়েছে। গত জুন মাসের মাঝামাঝি রোপন করা চারা থেকে দু’মাসের মধ্যেই ফসল তোলা শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রতিদিন গড়ে প্রতিটি ২৫ কেজি ওজনের ৩৫/৪০টি প্লাস্টিকের বক্স বা ক্যারেট টমেটো সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিকে ১৪০/১৫০ টাকা প্রতি কেজি টমেটো বিক্রয় করা গেলেও ভারতীয় টমেটো আমদানী শুরু হওয়ায় মূল্যে অনেকটা কমে গেছে। বর্তমানে সর্বনিম্ন ৯০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা কেজি প্রতি মূল্য পাওয়া যাচ্ছে।
বাগানে টমেটো তোলা শ্রমিকরা জানান, টমেটো নিমসারে পাইকারদের কাছে পৌঁছে দেই বিক্রয়ের জন্য। এখানে কর্মরত প্রায় সবাইকে মোবারক মাসিক বেতনের পাশাপাশি বাসস্থানেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। একদিকে যখন গ্রীস্মকালীন ফলন সংগ্রহ করা হচ্ছে অন্যদিকে আগাম শীতকালীন চারাও পরিচর্যা চলছে সমান তালে। সেখানেও বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার চারা নিবিড় পরিচর্যায় বড় হচ্ছে। আর এভাবেই স্থানীয় পর্যায়ে সহজলভ্য করতে বছরব্যাপী গ্রীষ্ম ও আগাম শীতকালীন টমেটো চাষে সারাদিনই টমেটোর দুটো মাঠ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক মোবারক।
আরও পড়ুন: শরতের কাশফুল বাংলার প্রকৃতির সাদা শোভা
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের তার বাগানে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি এরই মাঝে একটি সোলার সেচ পাম্পের জন্য আবেদন করেছি। তাছাড়াও পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদন ও স্থানীয়ভাবে বারো মাস টমেটো সংরক্ষণে একটি কোল্ডস্টোরেজ নির্মানে সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি। এছাড়া পৃথক গ্রাফটিং ও চারা উৎপাদন করে চারা কৃষকদের কাছে বিক্রি করছেন তিনি।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসা. আফরিণা আক্তার জানান, আমরা তাকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি এবং তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি।