শেখ হাসিনার মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে ট্রাইব্যুনালে

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজও চলছে শেষ সাক্ষীর জেরা। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ এ জেরা শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন দ্বিতীয় দিনের মতো মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে জেরা করছেন।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
বিজ্ঞাপন
প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত আছেন গাজী এমএইচ তামিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা। সোমবার (৬ অক্টোবর) দিনভর জেরা চললেও তা শেষ না হওয়ায় আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
মামলার শেষ সাক্ষী হিসেবে মো. আলমগীর গত ৩০ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড ঘটে এবং ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
তাঁর জবানবন্দি অনুযায়ী, ওই সময় ছাত্র-জনতার ওপর অন্তত তিন লাখ পাঁচ হাজার গুলি ছোড়া হয়।
বিজ্ঞাপন
জবানবন্দির সময় যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদনসহ বিবিসি, আল-জাজিরা ও আমার দেশ পত্রিকার প্রামাণ্যচিত্র ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত হয়। তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরিও প্রচারিত হয়।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ কার্যদিবসে মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। শেষ সাক্ষীর জেরা শেষে মামলাটি যুক্তিতর্ক ও রায় ঘোষণার পর্যায়ে যাবে বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল সূত্র।
বিজ্ঞাপন
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষীকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে পাঁচটি অভিযোগ, আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ ও শহীদদের তালিকার বিবরণ সংযুক্ত রয়েছে।
এ মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। অন্য সাক্ষীদের জবানবন্দিতে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সারাদেশে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ বর্ণনা উঠে এসেছে, যেখানে শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।