পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়াতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ডুমুর গাছে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় স্বামী মমতাজ ওরফে সুলতানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনাটি ঘটে  রংপুরের বদরগঞ্জে।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকালে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তারিক হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। রায় ঘোষণার পর তাকে কঠোর পুলিশি পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে সুমাইয়া আখতার শারমিনের সঙ্গে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার খাগড়াবন্দ মধ্যপাড়া গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে মমতাজ ওরফে সুলতানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তারা দু’জন বিয়ে করে এবং এক বছর সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতেই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন। এরমধ্যে স্বামী মমতাজ ওরফে সুলতান পাশের গুচ্ছগ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে সুমাইয়ার সঙ্গে স্বামী মমতাজের ঝগড়া হয়। ২০১৯ সালের ৪ জুন মমতাজ মোবাইলফোনে স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে পাশের কুতুবপুর বালুয়াপাড়া গ্রামের যমুনেশ্বরী নদীর তীরে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে একটি ডুমুর গাছে ঝুলিয়ে রেখে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হয় হত্যার আগে মমতাজ ওরফে সুলতান তাকে মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। পরে মমতাজকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ওই সময় স্ত্রী সুমাইয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করে সে। পরবর্তীতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় মমতাজ।

মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ মমতাজ ওরফে সুলতানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক আসামি মমতাজকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দনে। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি জানান, “আমরা বাদী পক্ষে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।”

তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন দাবি করেন, “তার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।”

এসএ/