কক্সবাজার হোটেল টর্চার সেলে পর্যটকদের নির্যাতন,মূল হোতা গ্রেফতার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ পিএম, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কক্সবাজার হোটেল টর্চার সেলে পর্যটকদের নির্যাতন,মূল হোতা গ্রেফতার

কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে 'টর্চার সেলের' জিম্মি অবস্থা থেকে পর্যটকসহ চারজনকে উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত দালাল চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল মালেক'কে গ্রেপ্তার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, রোববার মধ্যরাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের নীলিমা রিসোর্টের সামনে এ অভিযান চালানো হয়।

গ্রেপ্তার মো. আব্দুল মালেক (৩৮) কক্সবাজার শহরের পশ্চিম বাহারছড়া এলাকার মৃত গোরা মিয়ার ছেলে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আব্দুল মালেক একজন ইজিবাইক (টমটম) চালক। সে গাড়ী চালকের আড়ালে কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল-মোটেল জোন সক্রিয় দালাল চক্রের মূলহোতা। তার নেতৃত্বে ৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র রয়েছে।

সোমবার ( ৮ আগস্ট ) ভোরে কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা সংলগ্ন আবাসিক কটেজ জোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পায় পুলিশ। এসময় কটেজ ব্যবসার আড়ালে 'টর্চার সেলে' জিন্মি রাখা অবস্থায় দুই পর্যটক ও দুই কিশোরকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সাইনবোর্ড বিহীন 'শিউলি রিসোর্ট' নামের ওই আবাসিক কটেজে তল্লাশী চালিয়ে নির্যাতন চালানো ও আপত্তিকর কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছুসংখ্যক উপকরণ উদ্ধার করা হয়। 

এ ঘটনায় মঙ্গলবার ( ৯ আগস্ট ) সকালে ভূক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাবা মো. বেলাল আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১১ জনকে আসামি করে কক্সবাজার থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ১১ আসামির মধ্যে আট জন পুরুষ ও তিন জন নারী রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিউলি রিসোর্ট নামের আবাসিক কটেজের কথিত 'টর্চার সেলে' পর্যটকদের জিম্মি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় দায়ের মামলাটি তদন্ত করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হামিদ। ঘটনার তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার ব্যাপারে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

মো. রেজাউল করিম বলেন, কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে টর্চার সেলে পর্যটকদের জিম্মি রেখে নির্যাতনের মামলার তদন্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের পাশাপাশি জড়িতদের কয়েকজনকে পুলিশ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। রোববার মধ্যরাতে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট সংলগ্ন নীলিমা রিসোর্টের সামনে ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল মালেক অবস্থান করছে খবরে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহজনক এক ব্যক্তি পালানোর চেষ্টাকালে ধাওয়া দিয়ে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পর্যটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, " কথিত টর্চার সেলে পর্যটকদের জিম্মি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের মূলহোতা আব্দুল মালেক জড়িত থাকার তথ্য পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। পাশাপাশি হোটেল-মোটেল জোনে সক্রিয় দালাল ও অপরাধী চক্রের ব্যাপারে সে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। "

" আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে সক্রিয় দালাল চক্রের সদস্যরা আগত পর্যটকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা এবং বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে নানাভাবে হয়রানি করত। এ চক্রটি কম ভাড়ায় ভাল মানের হোটেলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে কমিশন বাণিজ্যের পাশাপাশি পর্যটকদের অপরাধীদের হাতে পর্যটকদের তুলে দিত। শুধু তা-ই নয়, দালাল চক্রটি কলাতলী এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালীর কাছে মাসিক চাঁদা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরণের অপরাধ চালিয়ে আসছিল " বলেন, রেজাউল করিম।

পর্যটন পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, মামলার তদন্তে ঘটনায় জড়িত যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে; তাদেরকেই গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আরএক্স/