জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের টাকা প্রধান শিক্ষকের পকেটে
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
শ্রীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরের টেংরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব থেকে জালিয়াতি করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি গত ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব লাভ করেন। এর পূর্বে বিদ্যালয়ে এডহক কমিটি ছিল।ওই কমিটিতে পাদাধিকার বলে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন সভাপতি ছিলেন। সে সময় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা হতো। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিধি অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব তার স্বাক্ষরে পরিচালিত হওয়ার কথা।
তিনি জানান, সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যাংকে হিসাব নাম্বার খুলার জন্য প্রধান শিক্ষক তার কাছ থেকে স্বাক্ষর কার্ড তৈরি করে নিলেও ব্যাংকে তার স্বাক্ষর সম্বলিত কার্ড জমা করেনি এবং তা পরিবর্তন করেননি। তিনি সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনের পরও দীর্ঘ এ সময়ে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক মিলে বিদ্যালয়ের নামে সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার হিসাব নাম্বার ০২১৪১০০০০১২১৭ থেকে ৩টি চেকের মাধ্যমে ২ লাখ ১৭ হাজার ১৭৮ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ হিসাব নাম্বারে সরকার থেকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের অর্থ (বিভিন্ন খাত) প্রদান করা হয়। অথচ এ সময়ে ব্যাংক হিসাব তার স্বাক্ষরে পরিচালনা করার বিধান।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রয় সংক্রান্ত ভাউচারে তার স্বাক্ষর জাল করার ঘটনা তার সামনে এলে তার সন্দেহ তৈরি হয়। পরে তিনি ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখতে পান দেড় বছর হয়ে গেলেও ব্যাংকে তার স্বাক্ষর কার্ডই জমা দেয়া হয়নি। পূর্বের কমিটির স্বাক্ষরে প্রধান শিক্ষক টাকা তুলে নিয়েছে।
টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়ে এডহক কমিটির তৎকালীন সভাপতি উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, তিনি দীর্ঘ ১৫ মাস পূর্বে দায়িত্ব ছেড়েছেন। এখন কিভাবে তার স্বাক্ষরে টাকা উঠবে তা তার জান নেই। তবে হয়তো তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক এমন কাজ করেছেন বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তদন্তনাধীন বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জনবণেীকে বলেন, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও তিনি মিলে বিষয়টি তদন্তের কাজ শেষ করেছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট এ রিপোর্ট উপস্হাপন করা হবে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূত ভাবে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তলের সত্যতা পাওয়া গেছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকার পরও দীর্ঘ সময় ধরে পূর্বের এডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের কোন নিয়ম নেই। গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন,তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএ/