খুলনার রায়েরমহল টু কৈয়া সড়ক সংস্কারের ২ মাস না যেতেই অসংখ্য খানাখন্দ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:১১ অপরাহ্ন, ১লা জুলাই ২০২৫

দুই মাসও পার হয়নি সংস্কারের তার আগেই খুলনার রায়েরমহল টু কৈয়া বাজার সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। উঠে গেছে কার্পেটিং, কোথাও কোথাও সড়ক ঢেউ খেলানো। বৃষ্টির পানিতে জমে থাকা গর্ত এখন রীতিমতো দুর্ঘটনার ফাঁদ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও তদারকির অভাবেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে “ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন” প্রকল্পের অধীনে এই সড়কটির (মোস্তফার মোড় থেকে কৈয়া বাজার) ৩.২ কিলোমিটার সংস্কারে বরাদ্দ ছিল ৭ কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। বছরখানেক গড়িমসির পর চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয় গর্তের।
- পরবর্তীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিওবি অর্থায়নে আরও দুইটি অংশে কাজ করা হয়—
- ফলইমারি মাদ্রাসা থেকে রাজবাঁধ কালভার্ট পর্যন্ত ৬০০ মিটার: বরাদ্দ ৮০ লাখ টাকা
- রাজবাঁধ থেকে কৈয়া বাজার পর্যন্ত ২.১ কিলোমিটার: বরাদ্দ ৩ কোটি টাকা
এই অংশগুলোরও একই পরিণতি। মাত্র দুই মাসেই গর্ত তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে রাজবাঁধ থেকে কৈয়া বাজার অংশে সড়কটি এখন কার্যত অনুপযোগী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের বিটুমিন, খোয়া ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণকালে বারবার অভিযোগ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কটির মাঝে উঁচু থাকার কথা থাকলেও সেটি নিচু করে তৈরি করায় বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে দ্রুত ক্ষতির কারণ হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন,“কাপেটিং উঠে গেছে ও গর্ত হয়েছে, দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিটুমিন ও অন্যান্য সামগ্রীর মান পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে যাচাই চলছে।”
বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী গৌতম কুমার মণ্ডল জানান,‘সড়কের নিচু অংশ উঁচু করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা মেরামত করা হবে।’
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির মধ্যেও তড়িঘড়ি করে গর্তে পিচ ঢেলে মেরামতের কাজ চলছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা সড়ক যদি দুই মাসেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে, তাহলে দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের। তাদের দাবি, একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এসডি/