‘দেশে ২০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য মজুত আছে’
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
২০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য মজুত আছে, আমন চলে আসবে। আইএমএফ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাবো। সবমিলিয়ে অক্টোবর থেকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, তবে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়বে। আগস্ট মাসের তথ্য হাতে এসেছে। তবে সরকারপ্রধান দেশের বাইরে আছেন। ওনাকে দেখানোর পর আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতি প্রকাশ করবো।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে (৬ সেপ্টম্বর) মঙ্গলবার উন্নয়ন সাংবাদিকদের সংগঠন ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) উন্নয়ন সংলাপে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান মামুনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীনের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গেলো ১০ বছরে দেশে উন্নয়ন বেশি হওয়ায় খরচও হয়েছে বেশি, আমলে নেওয়া হয়নি অনেক কিছু। করোনাভাইরাস ও বহির্বিশ্বে মোড়লদের কোন্দলের কারণে দেশের অর্থনীতি কিছুটা বিপাকে থাকলেও আগামী অক্টোবরের মধ্যে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
জ¦ালানি তেলের মূল্য আগস্টে বাড়ানো হয়েছে, তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বর্তমান অবস্থায় সকলের কৃচ্ছ্রসাদন হওয়া দরকার। অর্থনীতির কাজই হচ্ছে মাপ-জোঁক করে করতে হবে। বিগত ১০ বছরে নতুন প্রাপ্তি ছিল বেশি। আমাদেরকে বৈশি^ক কারণেই এই সংকট হয়েছে। খাদের শেষপ্রান্তে যেয়ে সরকারপ্রধান লাগাম ধরেছেন। এতে করে আমরা অনেক কিছু থেকে বেঁচে গেছি। আগস্টে মূল্যস্ফীতি বাড়বে ও সেপ্টেম্বরেও থাকবে। মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বরে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে জিডিপি সাড়ে ৭ নতুনা সাড়ে ৬ শতাংশ হয়ে দাঁড়াবে। এই মাসে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে অক্টোবরে অনেক কমে আসবে মূল্যস্ফীতি। আশা করি মূল্যস্ফীতি কমবে।
তিনি বলেন, আমরা শ্রমভিত্তিক অর্থনীতির দেশ। দেশ থেকে অর্থ বিদেশ যাচ্ছে আবা বিদেশ থেকেও দেশে আসছে। খাদ্য রিজার্ভ আছে। আমনটা চলে আসবে। চালের দাম কমে আসছে। অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও কৃষিতে প্রধান্য দেওয়া হয়। আমরা এখানে অবকাঠামো ও শিক্ষা। তবে অবকাঠামোতে বিদ্যুৎ, চতুর্থ খাদ্য ও স্বাস্থ্য।
আইএমএফের ঋণ সম্পর্কে বলেন, আইএমএফের দায়-দায়িত্ব আমাদের জন্যও রয়েছে। কোন সদস্য বিপদে পড়লে তারা ঋণ, উপদেশ, সহযোগিতা দিবে। কোন রাষ্ট্র খাদে পড়ে গেলে সেখান থেকে তুলে আনার দায়িত্ব আইএমএফের। এখন আমাদের প্রয়োজন বেশি। সেক্ষেত্রে ঋণ চাইতে হবে। আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করতে হবে মহাজনের মত নয়। আইএমএফের ঋণ পেয়ে যাবো। সামাজিক স্থিতিশীল নিশ্চিত করা না গেলে কেউ কাজ করতে পারবে না। দারিদ্র্যের হার ২০ আশেপাশে রয়েছে হয়তো তবে সঠিক বলা যাচ্ছে না।
দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে আইনের প্রয়োগে কঠোর হতে হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই হয় তবে আমাদের এখানে বেশি দৃশ্যমান। আমরা চেষ্টা করি দুর্নীতি কমিয়ে রাখতে। দারিদ্রতাও দুর্নীতির অন্যতম কারণ। অনেক কাজে প্রকল্প পরিচালকের এখানে-সেখানে হয়তো কিছু এদিক-সেদিক হয়ে যায়। আমরা এখন যে বড় প্রকল্প নিয়েছি তা আমাদের পূর্বপুরুষরাও করেনি বা চিন্তাও করেনি। তবে দুর্নীতিবন্ধে প্রকল্প পরিচালকরা বসে থেকে কাজ করাবে। একজনকে একাধিক প্রকল্প না দেওয়া হয়। তবে আমাদের এই চাওয়া পূরণ হয়নি। ক্রয় ও কাজে আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। আইন প্রয়োগে কঠিন হতেই হবে। কোন খাতির করতে পারবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান যুগ হচ্ছে বিশেষায়িত যুগ ও পেশার যুগ। কেননা বিচার করতে হয় বিধিবদ্ধ আইন থেকে শুধু মাথা থেকে নয়। অনেক ক্যাডারে একমত নই। তবে পরিকল্পনা বা বেশকিছু বিশেষায়িত খাত প্রয়োজন। এই সাপ্লাই কমে যাবে। তাদের বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। ইকোনমিক জোনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ইকোনোমক জোনগুলো বিশেষায়িত এলাকা। সেখানকার অবকাঠামো ঠিক করা আমাদের কাজ। সেখানে জমি কিনে দেয়া ও ব্যাংকঋণ দেয়া আমাদের কাজ নয়।
আরএইচ/