দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুর
৩০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে জমি দখলের চেষ্টা
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, ৯ই অক্টোবর ২০২২
সিদ্ধিরগঞ্জের সঙ্গবদ্ধ ভূমিখেকো চক্রের কবলে পড়েছেন আব্দুস সালাম নামে একজন জমির মালিক। ৩০লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে চক্রটি জোর করে তার ১৪ শতাংশ জমি দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে একটি সঙ্গবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে। চাঁদার টাকা না পেয়ে বাড়ী-ঘওে দফায় দফায় হামলা-বাঙচুরসহ থেমে নেই চক্রটির আগ্রাসন। এমন অভিযোগ করেন মাতুয়াইল মুসলিমনগর এলাকার মৃত ছমছের আলীর ছেলে আব্দুস সালাম। তিনি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি পাশাবর্তী ডেমরা থানার ডগার এলাকার সাফ কবলা দলিলমূলে ১৪ শতাংশ জমি কিনে পড়ে বিপাকে। দফায় দফায় বাড়ি-ঘর ভাঙচুরসহ ও হুমকীর মূখে দিন কাটাচ্ছে এ ভুক্তভোগী পরিবারটি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ডেমরা থানার মাতুয়াইল ইউনিয়নের ডগার মৌজায় বিগত ২০১২ সালে সাফ কবলা দলিলমূলে ১৪ শতাংশ জমি কিনেন মাতুয়াইল মুসলিমনগর এলাকার মৃত ছমছের আলীর ছেলে আব্দুস সালাম। পরে নিজের নামে নামজারি করে জমা খাজনা ও হল্ডিং নাম্বার নিয়ে টিনসেট বাড়ী নির্মাণ করেন। কিয়ারটেকারের দায়ীত্ব দেন কফিল উদ্দিনএক ব্যক্তিকে। চলতি বছরের ২৪ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব সানারপাড় এলাকার মৃত আব্দুল আলীর ছেলে ওসমান গণি দলবল নিয়ে কেয়ারটেকার কফিল উদ্দিনকে মারধর করে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা না দিলে বাড়ী-ঘর ভেঙে জমি দখলের হুমকি দেন। এঘটনায় বাড়ীর মালিক আব্দুস সালাম গত ২৭ জুন ডেমরা থানা জিডি করেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওসমান গণি প্রতিশ্রুতি দেন চাঁদা দাবি করবেন না। কিন্তু গত ৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়ী-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে দিবে না বলে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম, ওসমান গণিকে প্রধান কওে এবং ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বিজ্ঞ সি.এম.এম আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ঢাকা সিআর-৩৩৯/২২। একই সাথে চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যদের কবল থেকে রক্ষা পেতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। যার নং-১১১৪৭/২২। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিবাদীদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানো ও জমিতে শান্তি শৃঙ্খলা অবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।
এ ঘটনায় আব্দুস সালাম বলেন, নালিশা জমির প্রকৃত খতিয়ান ৬৬৫৪। আমার নামজারী খতিয়ান ৩৫১। আরএস দাগ ২৭০৪ ও ২৭০৫ সিটি জরীপ দাগ ১২৫৭৬। নিজাম উদ্দিন তফসিল “ক” ভূয়া ৫৩৬৫ খতিয়ান দেখিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে আদেশ পেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার নামে মালিকানা খতিয়ান ও রেকর্ডভুক্ত করেনি। তার আগেও আদালতে একটি মামলা করেছিল। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আদালত ওই মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলায় হেরে নিজাম উদ্দিনের ভাই ওসমান গণি সন্ত্রাসী কায়দায় জমি দখল করতে চায়।
হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বিবাদীরা জমিতে জোর করে স্থাপনা নির্মাণ করার চেষ্টা করছে। এর পিছনে ওসমান গণির নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ একটি ভূমিদস্যু চক্র রয়েছে। তারা বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে পাওয়ার ও আম-মোক্তার দলিল করে জমির মালিকানা দাবি করে দখলের হুমকি দিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায় করে। এতে সফল না হলে পাওয়ার মূলে আদালতে মামলা করে জমির মালিককে বছরের পর বছর হয়রানি করে অবশেষে টাকা নিয়ে কেটে পড়ে এমন বহু অভিযোগ রয়েছে চক্রটির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওসমান গণি বলেন, তফসিল “ক” ডগার মৌজায় আরএস ৪৩৪ খতিয়ানে ২৭০৪ ও ২৭০৫ দাগটি ঢাকা সিটি জরীপে ৬৬৫৪ খতিয়ান ও ১২৫৭৬ দাগ এবং তফসিল “খ” সিটি জরীপে ৬৬৫৪ খতিয়ান ১২৫৭৬ দাগে ২৮১২ অযুতাংশের অন্দরে ১৫০০ অযুতাংশ জমির মালিক চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার নেছার আহমেদ ও কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার মহিউদ্দিন। তাদের কাছ থেকে তার ভাই নিজাম উদ্দিন আম-মোক্তার দলিল করে ঢাকা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মোকদ্দমা করেন। ট্রাইব্যুনাল তফসিল বর্ণিত জমি সিটি জরীপ মোতাবেক ১৫০০ অযুতাংশ বাদীগণের নামে নতুন খতিয়ান খুলে রেকর্ডভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের আদেশ বলে জমির মালিক আমার ভাই নিজাম উদ্দিন। তাই জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।
আরএক্স/