আমন ধানে পোকার আক্রমণ,দিশেহারা কৃষক


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন, ১৩ই অক্টোবর ২০২২


আমন ধানে পোকার আক্রমণ,দিশেহারা কৃষক
ছবি: জনবাণী

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধানের জমিতে পোকার ব্যাপক আক্রমণে দিশেহারা কৃষক। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়,কেন্দুয়া উপজেলায় এ বছর ২১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।


কিন্তু  প্রকৃত পক্ষে , কৃষকদের আমন চাষাবাদে আগ্রহ বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়। এরমধ্যে  কৃষকেরা জমিতে প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক প্রয়োগও শেষ করেছেন। কিন্তু এই সময়ে এসে ধানের জমিতে একধরনের পোকার আক্রমণে ধানের চারাগাছ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।


স্থানীয় কৃষি অফিস আমন ধানে পোকার আক্রমণের ব্যাপারে জানায় যে, আমন ধানের চারাগাছে আক্রমণকারী পোকাগুলির মধ্যে মাজরা পোকা,বাদামি দাগ,ব্লাষ্ট,  খোল পচা এবং কারেন্ট পোকাসহ বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক জনিত রোগ এবং ভাইরাস জনিত টুংরো রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। দফায়-দফায় ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমন হচ্ছে না। ফলে, ক্ষেতের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।


মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকালে উপজেলার  বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমন ধানের ক্ষেতে মাজরা, পাতা মেড়ানো এবং কারেন্ট পোকা,বাদামি দাগ রোগ এবং ব্লাষ্ট রোগের আক্রমণে ধান চারার অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।


উপজেলার চিরাং ইউনিয়নে পূর্বরাায়  এলাকার বাংগিবাড়ী হাওরে অনেক কৃষকের আমন ক্ষেতে ব্যাপকহারে পোকার আক্রমণ দেখা গেছে। সেখানকার কৃষক রেজাউল করিম এবং ওয়াসকরুনি বলেন, তারা ৫ বিঘা করে জমিতে আমন রোপণ করেছেন। তাদের সব ক্ষেতেই পোকা আক্রমণ করায় তারা পোকা দমনে দুই দফায় ৫০০০ করে টাকা খরচ করে কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। এর পরেও পোকা দমন হয়নি। এ অবস্থা আগামী আমন ফসলের ফলন নিয়ে  তারা  দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 


খিদিরপুর  এলাকার কৃষক আবু বকর মিয়া  জানান, তিনি এবার ৬ একর জমিতে আমন রোপণ করেছেন। তার প্রায় সব জমির ধানের খেতে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা এবং কিছু খেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। 


উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ছিটিয়ে খেতের পোকা দমনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু, অতি গরম অথবা অতি বৃষ্টির   কারণে পোকা দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। ১ বিঘা জমিতে এক দফা কীটনাশক প্রয়োগে তার ৫০০ টাকা খরচ হচ্ছে। ফলে, উৎপাদন খরচ বেড়েই চলছে। পোকা দমন করতে না পারলে ফলন কমবে আর ফলন ভালো না হলে কি করবেন, সে বুঝতে পারছেন না।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  এ কে এম শাহজাহান কবীর বলেন, আবহাওয়ার তারতম্যের জন্য কিছু ক্ষেতে পোকার উৎপাত শুরু হয়েছে। এব্যাপারে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করি ফলনের এ বিপর্যয় কাটিয়ে কৃষকরা ভালভাবে আমন ধান ঘরে তুলবেন।



আরএক্স/