গজারিয়ায় পরকীয়ার সন্দেহে নির্যাতন !


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, ২০শে অক্টোবর ২০২২


গজারিয়ায় পরকীয়ার সন্দেহে নির্যাতন !
ছবি: জনবাণী

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় স্বামীর সাথে পরকীয়ার সন্দেহে এক মহিলাকে গভীর রাতে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের পর চুল কাটে এবং শরীরের বিভিন্ন ¯’স্থানে ছুরিকাঘাত করে মরিচের গুঁড়ো ছিটানোর অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ফরিদা বেগমের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই মহিলার নাম রাবেয়া বেগম (৩৭)। সে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের করিমখাঁ গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী রাবেয়া বেগম জানান, দীর্ঘ ১২ বছর আগে তার স্বামী আবুল কালাম তাকে ছেড়ে অন্য আরেক জনকে বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করে। সংসার জীবনে রাবেয়ার ঘরে তিন মেয়ে রয়েছে। অভাবের সংসারে হাল ধরতে বাধ্য হয়ে রাবেয়া কিছুদিন ¯’স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে নিজে ই শুরু করেন ফেরি করে কাপড়ের ব্যবসা।

গত শনিবার দিন দিবাগত রাতে ¯’স্থানীয় লোকজনের সাথে রাবেয়া বেগম সিলেট হযরত শাহ জালাল ও শাহ পরান (রা.) মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তখন গাড়িতে প্রায় ৪৭ জন যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন পার্শবর্তী দৌলতপুর গ্রামের তাইজুদ্দিন মিয়া। তাইজুদ্দিন মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগমের সন্দেহ হয় তার স্বামী তাইজুদ্দিন উপর। 

রাবেয়া বেগম কে নিয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছে। এদিকে মাজার জিয়ারত শেষে তারা গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে ভবেরচর বাস¯ট্যান্ড এসে নামেন। ভবেরচর বাস ¯ট্যান্ড নামার পরই আগ থেকে ওত পেতে থাকা তাইজুদ্দিন মিয়ার স্ত্রী ফরিদার বেগমের নেতৃত্বে ৭/৮ জন লোক তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভবেরচর বাস ¯ট্যান্ড থেকে ৭/৮ কিলোমিটার দূরে রসুলপুর খাদ্য গুদাম সংলগ্ন একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় রাবেয়া বেগমের উপর নির্যাতন করে তারা। 


ছুরি দিয়ে রাবেয়ার গায়ের বিভিন্ন অংশ কেটে সেখানে ছিটানো হয় মরিচের গুড়া, শুধু তাই নয় এলাকাবাসীর কাছে কলঙ্কিনী প্রমাণ করতে কেটে দেওয়া হয় মাথার চুলও। ব্যাপক মারধরের কারনে জ্ঞান হারায় রাবেয়া। পরবর্তীতে ¯’স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে পাঠায়। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক, কান্তা রানী দাস বলেন, রাবেয়া বেগমের গায়ে বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে কয়েকজন মিলে মারধর করেছে তবে তার আঘাত গুরুতর না হওয়ায় সেজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে টুনি আক্তার বাদি হয়ে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী বলেন, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।



এইচআর/