গোপালগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ২ নারীর মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, ২৬শে অক্টোবর ২০২২
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গাছে চাপা পড়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাঁচ কাহনীয়া ও বাঁশবাড়িয়া গ্রামে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতেরা হলেন- টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাঁচ কাহনীয়া গ্রামের রেজাউল খার স্ত্রী শারমিন বেগম (২৫) ও বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হান্নান তালুকদারের স্ত্রী রুমিছা বেগম (৬৫)।
এ তথ্য নিশ্চিত করে টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল মনসুর বলেন, সোমবার বিকাল থেকে সিত্রাংয়ের প্রভাবে টুঙ্গিপাড়ার ওপর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ের সময় পাঁচ কাহনীয়া গ্রামের রেজাউল খার স্ত্রী শারমিন বেগম ঘরের বারান্দায় বসে কাজ করছিলেন। তখন ঝড়ে আকস্মিকভাবে একটি গাছ ভেঙে ঘরের বারান্দায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই গাছচাপায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, এছাড়া হান্নান তালুকদারের স্ত্রী রুমিছা বেগম ঘরে শুয়ে থাকা অবস্থায় গাছ ভেঙে ঘরে পড়ে। তখন গাছের চাপায় তার মৃত্যু হয়। সিত্রাং এর প্রভাবে সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টার দিকে গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে কর্মরত আব্দুল হালিম খান নামের এক প্রকৌশলীর সরকারি বাস ভবনে একটি বিশাল আকৃতির গাছ হঠাৎ ভেঙে পড়ে। এতে সৌভাগ্যবশত কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও জানমালের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া গোপালগঞ্জে সিত্রাং ঝড়ের প্রভাবে শতাধিত কাঁচা ঘর—বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে অসংখ্য গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন সবজির ক্ষেত। সোমবার রাতে গোপালগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যায় এ ঝড়। প্রবল বেগে ঝড় ও ভারি বর্ষণে ক্ষতি হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। এতে সদর উপজেলা, কাশিয়ানী, কোটালীপাড়া, মুকসুদপুর ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের শতাধিক কাঁচা ঘর—বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। ক্ষতি হয়েছে মৌসুমী সবজির ক্ষেত। দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রবল বেগের ভারি বর্ষণ ও ঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, গাছপাল ভেঙে ও উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার দিনভর ভারি বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। এতে শহর ও গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন ছিলো। গোপালগঞ্জ কৃষি সসম্প্রদারণ অধিদপ্তরের উপ—পরিচাল ড. অরবিন্দু কুমার রায় জানান, ঝড়ে সবজির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে জরুরি জুম মিটিং-এর আয়োজন করেন। এসময় তিনি জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সকলকে সিত্রাং মোকাবেলায় বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বিজয়পাশা-ডুমদিয়া এলাকায় গাছ ভেঙে মহাসড়কে উপরে পরে। এর ফলে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এইচআর/