পুলিশের কাছথেকে আসামি ছিনতাই:মামলা তদন্তে সিটিটিসি
আজাহারুল ইসলাম সুজন
প্রকাশ: ১১:৪৪ অপরাহ্ন, ২১শে নভেম্বর ২০২২
ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের মুখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় করা মামলার তদন্তভার পেয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
সোমবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব হোসেন জনবাণীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন,আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের করা মামলাটি আমরা তদন্ত করতাম। উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখন মামলাটি তদন্ত করবেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। আমরা তাদের মামলা ও রিমান্ডে যাওয়া আসামিদের বুঝিয়ে দিয়েছি।
এর আগে রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। এসময় আসামি আরাফাত ও সবুরকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করেি জঙ্গিরা। ঘটনাস্থল আরাফাত ও সবুরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞনামা আসামি করা হয় আরও ৭-৮ জনকে।
এদিন রাত পৌনে ১০ টার দিকে কোতোয়ালি থানায় করা মামলার সুষ্ঠুতদন্তের জন্য আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডকৃতরা হলো- ‘শাহীন আলম ওরফে কামাল, শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন, বি এম মজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারী, আরাফাত রহমান, খাইরুল ইসলাম ওরফে সিফাত, মোজাম্মেল হোসেন, শেখ আব্দুল্লাহ, আ. সবুর, রশিদুন্নবী ভূঁইয়া।আসামিরা আনসার আল ইসলামের সদস্য।,
মামলার এজাহার সূত্রে থেকে জানা যায়, ‘আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আয়মান ওরফে মশিউর রহমান (৩৭), মো. ওমর ফারুক ওরফে নোমান ওরফে আলী ওরফে সাদ (২৮) রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন (২৬) সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক (২৪), তানভীর ওরফে সামশেদ মিয়া ওরফে সাইফুল ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬), ) কে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে।,
পরিকল্পনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি মোটরসাইকেল যোগে আনসার আল ইসলামের অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়। এছাড়াও আদালতের আশপাশে অবস্থান করা অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য আদালত প্রাঙ্গণের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করতে থাকে । এরপর পরিকল্পনা মত পুলিশের মুখে স্প্রে মেরে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
মামলা এজাহারে আরও বলা হয়, রবিবার সকালে কাশিমপুর থেকে ১২ জন আসামিকে ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার প্রসিকিউশন বিভাগে আসামিদের হাজিরা দেওয়ার জন্য সিজেএম আদালত ভবনের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনাল ৮-এ নিয়ে যাওয়া হয়।,
এ মামলার শুনানি শেষে জামিনে থাকা ১৩ নম্বর আসামি মো. ঈদী আমিন (২৭) ও ১৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪) আদালত থেকে বের হয়ে যায়।
‘এরপর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে আদালতের মূল ফটকের সামনে পৌঁছানো মাত্র আগে থেকেই দুটি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলামের ৫/৬ জন সদস্য, আদালতের আশপাশে অবস্থানরত আনসার আল ইসলামের আরও ১০/১২ জন সদস্য হামলা করে। তারা কনস্টেবল আজাদের হেফাজতে থাকা আসামি মো. আ. সবুর ওরফে রাজু ওরফে সাদ ওরফে সুজনকে (২১) মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান (২৪) মো. আরাফাত রহমান (২৪) , ছিনিয়ে নিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে।,
কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে আসামিদের মধ্যে কোনো একজন তার হাতে থাকা লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে কনস্টেবল আজাদের মুখে আঘাত পর আঘাত করে।
আরএক্স/