নিজ বিয়ের গেট দিয়ে লাশ বের হলো তরুণীর

সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চরচন্ডি গ্রামে বিয়ের মাত্র দু'দিন আগে পুকুরের পানিতে ডুবে রুকেয়া খাতুন (২৬) নামের এক লন্ডনি কন্যার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বিয়ের গেইট নির্মাণ ও রঙিন বাতিতে পুরো বাড়ি, ঘর সাজানোর পাশাপাশি যখন বাড়িতে বিয়ের ধুমধাম আয়োজন, ঠিক তখনই বিয়ের মাত্র দু’দিন রুকেয়ার মৃত্যুতে আনন্দের পরিবর্তে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

রুকেয়া চরচন্ডী গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছুরাব আলীর মেয়ে। ৪ বোন ও ১ ভাইয়ের মধ্যে রুকেয়া ছিলেন সবার বড়।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হলে বধূ হবার স্বপ্ন নিয়ে সম্প্রতি পরিবারের সদস্যদের সাথে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন রুকেয়া খাতুন। আর আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিয়ের দিন ধার্য ছিল। ধুমধাম করে বাড়িতে বিয়ের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। ৪ বোন ও ১ ভাইয়ের মধ্যে রুকেয়া সবার বড় হওয়ায় পরিবারের কাছে বিয়ের আনন্দটাই ছিলো অন্য রকম। কিন্ত সকল আনন্দকে ম্লান করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন রুকেয়া। বধূ বেশে স্বামীর ঘরে যাওয়া হলো না, স্বপ্ন শুধু স্বপ্নের মধ্যে রয়ে গেল প্রবাসী রুকেয়ার, লাশ হয়ে তাকে যেতে হয়েছে কবরে। আর লন্ডনী কন্যা রুকেয়ার মৃত্যুতে তার বাড়িসহ এলাকায় আনন্দের পরিবর্তে এখন বিরাজ করছে শোকের মাতম।

রুকেয়ার চাচা তালেব আহমদ গোলাপ জানান, রুকেয়া ছিলেন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মায়ের সাথে বাড়ির পুকুর ঘাটে যান রুকেয়া। তখন অসাবধানতাবশত রুকেয়া পুকুরের পানিতে পড়ে গেলে তার পায়ে ধরে তাকে পানি থেকে তুলার চেষ্টা করেন মা। তখন রুকেয়ার সাথে তার মাও পানিতে ডুবে যেতে থাকেন। তখন চিৎকার শুনে আশেপাশের মানুষ সহ দৌঁড়ে এসে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করতে পানিতে ঝাঁপ দেন তালেব আহমদ গোলাপ ও তার স্ত্রী। 

তারা রুকেয়ার মাকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও ততক্ষণে পানিতে ডুবে গিয়ে ভেসে উঠেন রুকেয়া। তখন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রুকেয়াকে উদ্ধার করে সিলেট নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান জানান, তার পরিবারের কোন আপত্তি না থাকায় অপমৃত্যু মামলা দায়েরের পর ওইদিন রাতেই জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন।