চলন্ত বাসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী উঠানামা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৩৫ এএম, ৫ই ডিসেম্বর ২০২২

ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর উত্তর এবং দক্ষিণ পাশে বাস থামার নেই কোন স্টপেজ, চলন্ত বাসে হুড়হুড়ি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের বাসে উঠানামা করা হচ্ছে।যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্য স্থানে নিয়ে যেতে ডাক দিচ্ছে বাসের সহকারী। যাত্রীর আশায় আবার মাঝ রাস্তায় বাস থামাচ্ছে চালকরা। এতে সড়কে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক যান চলাচল।
রবিবার (৪ ডিসেম্বর )সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আলম এশিয়া ও সৌখিন পরিবহন দুটি বাস একসঙ্গেই স্টপেজ ছাড়া মহাসড়কের মাঝখানে উড়াল সেতুর উত্তর পাশে যাত্রী উঠানামা করেছে। এমন সময় চলন্ত ওই বাস দুটিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী উঠাতে দেখা গেছে। একটু পরই শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস যাত্রী উঠানোর জন্য এমনভাবে থামালো, তাতে যান চলাচলই বন্ধ হয়ে গেল। একটি বাসের কারণে সিগন্যাল ছাড়াই সড়কে সৃষ্টি হল যানজটের। এরকম প্রতিদিনই দেখা যায়, যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে ইচ্ছেমতো যাত্রী তুলছে অন্য বাসগুলোও। চলন্ত গাড়িতে দরজা বন্ধ রাখার কথা থাকলেও সেটা মানছে না অধিকাংশ বাসচালক। যাত্রীরাও ঝুঁকি নিয়ে বাসে উঠানামা করছে। এসব ঘটনা ঘটছে ট্রাফিক পুলিশের সামনেই।
বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভালুকা থেকে আসা যাত্রী আক্কাস, আকলিমা ও মক্কা মদিনা স্পিনিং মিল এর শ্রমিক রিং লাইনম্যান রফিক সহ কথা হয় আরো কয়েকজনের সঙ্গে। তারা সবাই ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে বাসের অপেক্ষায় ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের সড়ক বিভাজনের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। তারা বলেন, আন্তঃজেলার সব বাস উড়াল সেতুর মাথায় এসে দাঁড়ায়, তাই আমরা সবাই এখানে দাঁড়িয়ে আছি। যদিও সড়ক বিভাজনের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা ঝুঁকিপূণ তারপরও দ্রুত যাওয়ার জন্য এখানেই অপেক্ষা করছি।
বাস স্টপেজ ছাড়া দরজা খোলা রেখে যত্রযত্র যাত্রী উঠানো প্রসঙ্গে শ্যামলী পরিবহনের চালক রাজ্জাক মিয়া বলেন, রাস্তা থেকে যাত্রী না উঠালে বাসের সিট খালি থাকবে। অনেক শিক্ষিত মানুষ চলন্ত বাসে লাফিয়ে উঠে। তারা সচেতন না হলে শুধু চালক, হেলপারের দোষ দিয়ে লাভ কী।
নিরাপদ সড়ক চাই শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রিপন বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশ প্রশাসনকে আরো সোচ্চার হতে হবে। তাছাড়া শুধু আইন দিয়ে হবে না। মানুষকে সচেতন করতে হবে। আর মানুষ সচেতন হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে। এছাড়াও স্থানীয় থানা পুলিশসহ হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কংকন কুমার বিশ্বাস বলেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রতিদিনই পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সড়ক বিভাজনের উপর যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে পুলিশ তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে নিষেধ করছে। যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা ও দরজা খোলা রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে পুলিশ থাকে সেখানে চালকরা দরজা বন্ধ করে রাখে, আর পুলিশ না দেখলেই দরজা খোলা রেখে যাত্রী উঠানামা করায়। এ বিষয়ে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা বাড়াতে হবে।