হাসপাতালের শয্যায় শুয়েই বিয়ে, কষ্টের মাঝেও সুখের মুহূর্ত
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

বছরখানেক আগে পরিচয় আনন্দ সাহা ও অমরিতা সরকারের। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েছিল আগামী ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু হঠাৎ ঘটে যাওয়া এক দুর্ঘটনা বদলে দেয় সব পরিকল্পনা।
গত ৭ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে মানিকগঞ্জে ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন আনন্দ। তার দুই হাত ও একটি পা ভেঙে যায়, কোমরে লাগে মারাত্মক আঘাত। প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁকে মানিকগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো তিনি চলাফেরায় পুরোপুরি অন্যের ওপর নির্ভরশীল।
এমন পরিস্থিতিতেই প্রিয় মানুষটিকে একা ফেলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অমরিতা। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে বিয়ের আয়োজন এগিয়ে আনা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের হলরুমে সম্পন্ন হয় তাদের বিবাহ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেই দুই হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা আনন্দ কনের কপালে সিঁদুর পরিয়ে দিচ্ছেন। ধর্মীয় আচার মেনে সীমিত পরিসরে বিয়ে সম্পন্ন হয়, উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা।
মানিকগঞ্জ শহরের চান মিয়া লেন এলাকার বাসিন্দা আনন্দ সাহা স্থানীয় ব্যবসায়ী অরবিন্দ সাহার ছেলে। শহরে তাদের কয়েকটি ব্যবহারিক পণ্যের ব্যবসা রয়েছে। নববধূ অমরিতা সরকার ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী গ্রামের মেয়ে এবং মানিকগঞ্জ শহরের খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
হাসপাতালের মেডিকেল অ্যান্ড ইউনিট প্রধান সিরাজুল ইসলাম জানান, রোগীর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে অন্য কোনো রোগীর চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটেনি।
আনন্দের চাচাতো ভাই অমি সাহা জানান, ‘‘ডিসেম্বরে বড় আয়োজনে বিয়ের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার পর এখন আমাদের প্রথম কাজ আনন্দের চিকিৎসা। তাই পরিবারের সিদ্ধান্তে গত রাতে সীমিত পরিসরে বিয়ে হয়েছে। নবদম্পতির জন্য সবাই দোয়া করবেন।’