একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে দেশকে উন্নত করতে

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ অর্থনীতিতে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে দেশকে উন্নত করতে, এগিয়ে নিয়ে যেতে। অশুভ শক্তি যতই আমাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করুক, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অগ্রযাত্রার পথে। আঘাত আসবে, ষড়যন্ত্র আসবে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ আর পিছিয়ে যাবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমরা সেভাবেই দেশ পরিচালনা করবো। জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সম্মেলন শুরু হয়। শুরুতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন শেখ হাসিনা। দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী পর্বে শোকপ্রস্তাব উপস্থাপন করেন দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ওবায়দুল কাদের।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতা শুরু করেন। তিনি প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ভাষণ দেন। সভাপতির বক্তব্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। দলীয় নেতাকর্মীদের সামনে সে প্রক্রিয়াও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতি করতে ক্ষমতায় আসিনি। পিতাকে (বঙ্গবন্ধুকে) বলতে চাই, আপনার জনগণ আর অভুক্ত থাকবে না। কথা দিলাম। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে এমন কাজ করতে দিতে পারি না। বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ আমার জীবন থাকতে কারও হাতে তুলে দেব না, এটাই ছিল আমার প্রতিজ্ঞা। 

প্রধানমন্ত্রী বলনে, আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম- নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করবো সেটা করেছি। বিমানবন্দর, সারাদেশে স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ করেছি। এর আগে কোনো সরকার কি পেরেছে ১০০ ব্রিজ একসঙ্গে করতে? কে পেরেছে? আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই পারে।

যুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।  যুদ্ধ চাই না। স্যাংশনস চাই না। এগুলো বন্ধ করুন। সব দেশ স্বাধীন, তারা তাদের মতো চলতে পারবে, সে অধিকার তাদের আছে। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমরা জানি। কোভিডের অর্থনৈতিক অভিঘাত থেকে কেবল আমরা বেরিয়ে এসেছিলাম। এখন এই যুদ্ধ আর স্যাংশন আমাদের সব অগ্রযাত্রা নষ্ট করছে। অতএব, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করুন। তাদের উসকানি দেওয়া বন্ধ করুন। আমরা শান্তি চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ভোট দেওয়ার অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার- আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগেরে স্লোগান ছিল- আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। আমরা নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তাদের আর্থিক সক্ষমতা তাদের হাতে দিয়েছি। তারা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেই সুযোগ করে দিয়েছি। সবাইকে ভোটার আইডি কার্ড করে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন-২০২২ করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের যদি ভোট চুরির নিয়ত থাকতো, তাহলে তো খালেদা জিয়ার মতো আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন করতে পারতাম। আমরা সেটা করিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এরকম এক সম্মেলনে আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে সভাপতি করা হয়। ছেলেমেদের দায়িত্ব রেহানার ওপর ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছিলাম। স্বাধীনতার সুফল যেন মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছায়, সেটাই ছিল লক্ষ্য। ‘আমার বাবা রাষ্ট্রপতি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আর আমি চার চারবার প্রধানমন্ত্রী। আমাদের পরিবার দুর্নীতিই যদি করতো, তাহলে দেশের মানুষকে আর কিছু দিতে পারতাম না। আমরা দেশের মানুষকে দিতে এসেছি। মানুষের জন্য করতে এসেছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যাতে সরকারে না আসতে পারে, অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ আমার জীবন থাকতে কারও হাতে তুলে দেবো না, এটাই ছিল আমার প্রতিজ্ঞা।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। তিনি দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য তিনি সেটা পারেননি। আমরা সেটা করছি।

এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।