ধামরাইয়ে সাবেক স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, ১লা জানুয়ারী ২০২৩
ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুর চৌড়াপাড়া এলাকায় মাকসুদা বিবি নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে র্যাব-৪ আসামীদের গ্রেফতারে ছায়াতদন্ত শুরু করে। এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চাঞ্চল্যকর মাকসুদা বিবি হত্যা মামলার প্রধান আসামী সাবেক স্বামী আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০) কে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার কানাইপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) র্যাব-৪ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ২৯ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার কানাইপুর বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০) কে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৪ জানায়- গত ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১১ টার সময় ধামরাই উপজেলার কালামপুর চৌড়াপাড়া এলাকায় দুই হাত বাঁধা ও নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় মাকসুদা বিবির মরদেহ পাওয়া যায়। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় আসামী আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার কানাইপুর বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। যার প্রেক্ষিতে র্যাব-৪ ও র্যাব-৮ এর যৌথ আভিযানিক দল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ (৫০)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মৃত মাকসুদা বিবি’কে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব-৪ এর সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন- গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম মৃত মাকসুদা বিবি এবং তার বর্তমান স্বামী পান্নু দুজনই ইট ভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। মাকসুদা বিবির পূর্বের স্বামী গ্রেফতাারকৃত আসামি আব্দুল হক ইব্রাহীম শেখ। ২০০৮ সালে তাদের বিয়ে হয়। তাদের বৈবাহিক জীবনে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। পারিবারিক কলহের জেরে ২০১৭ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর মাকসুদা বিবি পান্নু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পরও মাকসুদা ও ইব্রাহীমের যোগাযোগ হতো পুত্র সন্তানের জন্য।
মাকসুদা বিবির কাছে সন্তান থাকার সুবাধে আসামী ইব্রাহীমের সাথে মাকসুদার মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হতো এবং দেখা করতো। গত ২৭ ডিসেম্বর রাত ২ টার সময় ইব্রাহীম তার সাবেক স্ত্রীকে ফুসলিয়ে ধামরাই উপজেলার কালামপুর চৌড়াপাড়া এলাকার একটি কলাবাগানে নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এই ধর্ষণের বিষয় এবং বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সাবেক স্বামী ইব্রাহীম মাকসুদাকে আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে ইব্রাহীম তার সাবেক স্ত্রীর পরিহিত কাপড় খুলে দুই হাত বাঁধে এবং শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।