পলাতক নোমানকে ছাড়াই শুরু হচ্ছে রায়হান হত্যার বিচার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পলাতক নোমানকে ছাড়াই শুরু হচ্ছে রায়হান হত্যার বিচার

সিলেট ব্যুরো: সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার পলাতক আসামী পলাতক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন এই নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এমএ ফজল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানের মালামাল ক্রোক করতে হুলিয়া ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পায়নি। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ।’

এমএ ফজল আরও বলেন, ‘আজ ধার্য্য তারিখ ছিল পরবর্তী আদেশের জন্য। আদালত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কমপক্ষে দুটি পত্রিকায় নোমানের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হবে। এর মাধ্যমে তাকে অবহিত করা হবে যে, তিনি আদালতে হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য শুরু হবে।’

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ শিগগিরই হবে বলেও জানিয়েছেন এই আইনজীবী।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও তার মালামাল ক্রোকের পরোয়ানার বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য্য ছিল। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে সেদিন পরোয়ানার প্রতিবেদন না পাওয়ায় শুনানি পিছিয়ে আজ ২২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।

এদিকে, বুধবার আদালতে শুনানিকালে রায়হান হত্যার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটুচন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়হানের মা সালমা বেগমসহ অন্যান্য স্বজনরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে রায়হানকে গুরুতর আহত অবস্থায় এমএসচি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মৃত্যু হয়।

ঘটনার পরদিন রাতে কোতোয়ালী মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে মৃত্যু অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার। ওইদিন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়।

১৪ অক্টোবর পিবিআইকে আলোচিত এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্তভার পেয়ে ১৫ অক্টোবর কবর থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন করে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়। দুই দফার ময়নাতদন্তে রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৪টি আঘাত ছিল গুরুতর।

এ ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গড়ে ওঠে আন্দোলন। চলে নানা কর্মসূচি। নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম রাজপথে নামেন। বন্দর ফাঁড়ির সামনে কাফনের কাপড় মাথায় দিয়ে অনশন করে ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।