পেঁয়াজ চাষীদের মাথায় হাত!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, ১৩ই জানুয়ারী ২০২৩


পেঁয়াজ চাষীদের মাথায় হাত!
পেঁয়াজ চাষী

পেঁয়াজ হল অ্যালিয়াম গোত্রের সকল উদ্ভিদ। সাধারণ পেঁয়াজ বলতে অ্যালিয়াম কেপা কে বোঝায়। বাংলাদেশের মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ অন্যতম । বাংলাদেশের মসলা ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় পেঁয়াজের। এখন প্রায় সারা বছরই বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়। 


স্থানীয় জাতের মধ্যে রয়েছে- তাহেরপুরী, ফরিদপুরের ভাতি, ঝিটকা, কৈলাসনগর ইত্যাদি। এছাড়া কৃষি বিভাগ কয়েকটি জাত উদ্ভাবন করেছে। এসব জাতের ফলন বেশি এবং বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। এর মধ্যে অন্যতম জাতগুলো হলো:  বারি পেঁয়াজ-১: জাতটির কন্দ অধিক ঝাঁঝযুক্ত।


বাংলাদেশের কুষ্টিয়া, যশোর ও ফরিদপুর অঞ্চলে সব থেকে বেশি পেঁয়াজের চাষ হয়। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের পেঁয়াজ চাষ করা হয়। বাংলাদেশে এখন যেসব জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়: বারি পেঁয়াজ-১ (শীতকালীন), বারি পেঁয়াজ-২ (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৩ (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৪ (শীতকালীন), বারি পেঁয়াজ-৫ (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৬ (শীতকালীন) ও নাসিক রেড এন-৫৩(গ্রীষ্মকালীন)।


পেঁয়াজে চাষের জন্য সবচেয়ে অন্যতম হচ্ছে পেঁয়াজের দানা ও চারা। দানা ও চারা যদি উন্নত মানের এবং মানসম্মত হয় তাহলে পেঁয়াজ ভালো হবে এটা আশা করা যায়। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের দানা ব্যবসায়ীরা নাসিক রেড এন-৫৩ গ্রীষ্মকালীন দানা শীতকালীন পেঁয়াজের দানা হিসেবে বিক্রি করেছে। নাসিক রেড এন-৫৩ গ্রীষ্মকালীন দানা যেহেতু গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের দানা তাই শীতকালীন ফসল হিসেবে চাষ  করা প্রায় অসম্ভব। তাই ফসলের মাঠ থেকে পেঁয়াজ রোপনের পর নতুন শিকড় তৈরি না করে মারা যাচ্ছে ৯০% পেঁয়াজ ।এতে বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পেঁয়াজ চাষিরা। আমরা যদি আনুমানিক বিঘা প্রতি পেঁয়াজের খরচ দেখি তাহলে ,


উপরে উল্লেখিত সকল খরচ যদি একসাথে করা যায় তাহলে দেখা যায়, মোট আনুমানিক ১১৪০০০ টাকা । আর যদি জমি কৃষকের নিজ মালিকানাধীন না হয় তাহলে জমি ভেদে আনুমানিক‌ বাড়তে পারে ২০০০০ টাকা ।


কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার অন্তর্গত দানা ব্যবসায়ীদের প্রতারণার কারণে বেশিরভাগ কৃষকরা লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির‌‌ সম্মুখীন হচ্ছে। যেহেতু কৃষকরা তার ফসল উৎপাদন ও বিক্রয় করার মাধ্যমে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন তাই এই ক্ষতি তারা কোনভাবে সামলে উঠতে পারছেন না। কৃষকরা সাধারন কৃষি ফসল উৎপাদন করেন এবং সাপ্তাহিক বাজারে বিক্রি করে ওই সপ্তাহের জীবিকা নির্বাহ করেন। 


দানা ব্যবসায়ীদের কারণে পেঁয়াজ চাষের গ্রীষ্মকালীন দানা শীতকালে বিক্রি করায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে লক্ষাধিক টাকার এবং ফসল উৎপাদন না হয় তারা কিভাবে জীবিকা নির্বহন করবে এটা নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। যদি ১০% দানা বেঁচে যায় তাহলে বিঘা পতি ফলন হবে আনুমানিক ১০ মন যার বাজার মূল্য  সর্বোচ্চ স্বাভাবিক ধরলেও ২০ হাজার টাকা। এতে ওই পরিমাণ অর্থ তারা আর ফেরত পাবে না তারা। 


পরিবারের সকল খরচ মেটানো তাদের দ্বারা সম্ভব হবে না। কৃষকের মাঝে তাই দেখা দিয়েছে হতাশা। আবার হতাশার ফলে অনেকেই পেঁয়াজ চাষের অনীহা দেখা দিচ্ছে। যদি কৃষকের মাঝে এমন অনিহা দেখা যায় এবং পেঁয়াজ চাষ না করে তাহলে দেশের দৈনন্দিন পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে না এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ।