পা ধরে বলেছি হুজুর আমারে মাইরেন না, এরপর বুকে লাথি!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


পা ধরে বলেছি হুজুর আমারে মাইরেন না, এরপর বুকে লাথি!

শেরপুরের শ্রীবরদীতে একটি কওমী মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকার কারণে আসিফুল ইসলাম বিজয় (১৬) নামে এক শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসার ভেতরে বেত দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন হাফেজ মো. আমানুল্লাহ নামে এক শিক্ষক।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার খরিয়াকাজীরচর ইউনিয়নের পূর্ব খরিয়া গ্রামের নূর হেরা নূরানী তালিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৯টার দিকে আসিফুলকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।

ভুক্তভোগী ওই শিশু, পরিবার ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, শ্রীবরদী উপজেলার পূর্ব খরিয়া গ্রামের খলিলুর রহমান খোকনের ছেলে আসিফুল ইসলাম বিজয়কে মাদ্রাসায় দিয়েছিলেন কোরআনের হাফেজ বানাবেন বলে। আসিফও নিয়মিতই মাদ্রাসায় যেতো।

সম্প্রতি একদিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় এবং একদিন দেরি করে যাওয়ায় সোমবার দুপুরে ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হাফেজ মো. আমানুল্লাহ শিক্ষার্থী আসিফকে মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। এতে সে গুরুতর আহত হয়।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আসিফুল ইসলাম বিজয় বলেন, খুব বলেছি হুজুর আমারে মাইরেন না, তারপরও মারা বাদ দেই নাই। শেষে পা পর্যন্ত ধরেছি। এক পর্যায়ে আমাকে বুকে লাথি মারে। তারপরও আমি পা ধরেছি। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় খুব জ্বলতাছে।

আসিফুলের বাবা জানান, মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্রদের মাধ্যমে আসিফুলকে তার বাড়িতে পাঠানো হয়। পরে সেখানে আসিফুলের স্বজনরা তার শরীরের জখম দেখে তাকে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে এমন নির্মম নির্যাতনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান তারা।

শেরপুর জেলা শাখা আমাদের আইনের চেয়ারম্যান নূর-ই-আলম চঞ্চল বলেন, খুবই ন্যাক্কারজনক একটি কাজ করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

জেলা সদর হাসপাতাল ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হুমায়ুন আহমেদ নূর বলেন, রাতে আমাদের এখানে একজন রোগী আসেন। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রেখেছি।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। যদি আমরা অভিযোগ পাই, তাহলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএ/