চুরির অপবাদে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করলেন ইউপি সদস্য


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


চুরির অপবাদে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করলেন ইউপি সদস্য

পটুয়াখালীর দুমকিতে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে নাবিল (১৪) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিলেন পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেম্বার রানা। 

মঙ্গলবার (০৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। নাবিল বর্তমানে মৌকরন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। নাবিল দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়া গ্রামের রফিকুই ইসলামের ছেলে। বর্তমানে নাবিলের চুল কেটে মাথা ন্যাড়া করার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।

নাবিলের মা হাসিনা বেগম বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় আমার বড় ছেলে রবিউল নাবিলকে কাজে নেয়। কিন্তুু কাজ না হওয়ায় তারা ওখানে থাকে এবং তার কিছুক্ষন পর আমাকে ফোন দিয়ে বলে নাবিল মাদ্রাসার হেফজে খানার হাফেজ ওলিউল্লাহ হুজুরের মোবাইল চুরি করছে। এসময় মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী ও রানা মেম্বারের লোকজন নাবিলকে মারধর করে। 

তিনি আরো বলেন, মোবাইল যদি নাবিল চুরি করত তবে সে মোবাইল নিয়ে চলে আসত কিন্তুু মোবাইল তো কাঠের পাশেই পায় তারা। আমার ছেলে কোন মোবাইল চুরি করেনি কিন্তুু রানা মেম্বারের লোকজন চুরির অপবাদ দিয়ে আমার ছেলের মাথা ন্যাড়া করে দিছেয়ে। আমি সকলের নিকট অনুনয় বিনিনয় করলেও তারা আমাকে গালিগালাজ করে।

শিক্ষার্থী নাবিল জানায়, সকালে পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসায় কাজে গেলে মিস্ত্রী বলে কাজ হবে না। পরে ঐ জায়গা থেকে আশার সময় শুনি হুজুরের মোবাইল চুরি হইছে।তারপর মাদ্রাসার হুজুর ও স্থানীয় লোকজন আমাকে সন্দেহ করে মারধর করে এবং তার কিছুক্ষন পর আমার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয় রানা মেম্বার, রিপন মুন্সিসহ আরো অনেকে।

নাবিল আরো জানায়, মারার এক পর্যায়ে প্লাস দিয়ে আমার পায়ের নক টানতে থাকে তারা। মোবাইল পাওয়ার পরেরও আমার উপর এই অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায় তারা।

পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার হেফজে খানার হাফেজ ওলিউল্লাহ জানান, নাবিল এর বড় ভাই রবিউল আমাদের মাদ্রাসায় কাজ করে। নাবিলকে সকালে কাজে নিয়ে আসে রবিউল তার কিছুক্ষন পর বেঞ্চের উপর থাকা আমার মোবাইলটি পাওয়া যায়নি। তাই নাবিলকে জিজ্ঞেস করলে সে না বলে এবং মেম্বার রানাকে ফোন দিয়ে তার হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে কারা নাবিলের মাথার চুল কেটে দিছে তা আমরা জানিনা।
৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার রানা বলেন, নাবিল এর আগে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন মানুষের বাসা থেকে চুরি করছে। তাই তাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহাদাৎ হোসেন মাসুদ জনবাণীকে বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম। তারা যেটা করেছে তা ছেলেটির সাথে অন্যায় করা হয়েছে। এবিষয়ে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএ/