চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নারীসহ আহত ৬, অস্ত্র উদ্ধার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নারীসহ আহত ৬, অস্ত্র উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে নির্বাচনী পরবর্তী আ.লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শুকুর আলী ও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (বিদ্রোহী) মিজানুর রহমান টিপুর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের দুজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের নারীসহ আরও চারজন। 

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৭ টা থেকে ১১ টার মধ্যে দুই দফায় এ হামলা ও পালটা হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজশাহী রেফার করেন। 

এদিকে খবর পেয়ে দর্শনা থানা ও তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেই। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে  অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫ টি ধারালো অস্ত্র (হাসুয়া), দুটি মোটরসাইকেল ও একটি অবৈধ শ্যালো ইঞ্জিন চালিত আলমসাধু জব্দ করেছে। 

নৌকা প্রতীকের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর আহত দুই সমর্থকরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ গ্রামের দক্ষিনপাড়ার হাতেম আলী ছেলে হোসেন আলী (৫০) ও একই এলাকার আছের উদ্দিনের ছেলে শামীম (৩০)। আহতরা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সমর্থক তা নিশ্চিত করেছেন।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর আহত চার সমর্থকরা হলেন, তিতুদহ ইউনিয়নের ৬২ আড়িয়া গ্রামের বসতিপাড়ার মৃত আব্দুর রহমানের দুই ছেলে আওলাদ হোসেন (৫৫), জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০), জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪০) ও একই এলাকার আহাদ আলীর ছেলে শিমুল (১৮) আহতরা আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যানের সমর্থক তা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৮ টার দিকে দুটি মোটরসাইকেল ও একটি আলমসাধুযোগে ১০-১৫ জন হামলাকারী ৬২ আড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীরের বাড়িতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাই। এতে জাহাঙ্গীরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। হামলাকারীরা জাহাঙ্গীরের ভাই ও স্ত্রীকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এসময় প্রতিবেশি শিমুল প্রতিবাদ  করলে তাকেও বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। আহতদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে হামলাকারীরা সটকে পড়ে। পরে এলাকাবাসি ধাওয়া দিলে বাকিরা পালাতে পারলেও ধরা পড়ে হোসেন আলী ও শামীম। পরে তাদের দুজনককে আটক করে উত্তমমধ্যম দেয় স্থানীয়রা। এসময় হোসেনকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এলাকাবাসি। 

খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশ ও তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।  আহতদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। বিশৃঙ্খলা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। এঘটনায় পুরো ইউনিয়নজুড়ে বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা। 

নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শুকুর আলী বলেন, আমার কোন সমর্থকরা হামলার সাথে জড়িত নয়।  আমার দলে কোন উশৃংখ লোকজনের জায়গা নেই। যদি কেউ এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তার নিন্দা জানায়। প্রকৃত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

এ বিষয়ে জানতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (বিদ্রোহী) মিজানুর রহমান টিপুর মুঠোফোনে কল করে বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার কুদরত এ খোদা বলেন, আহত জাহাঙ্গীরের ক্ষতস্থানে ১৫ থেকে ২০ টিক্স, হোসেনের ক্ষতস্থানে  ১০-১৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে। বাকিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। 

দর্শনার থানার ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতা উভয়পক্ষের ২ জনকে কুপিয়ে ও চারজনকে পিটিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫টি ধারালো অস্ত্র হাসুয়া, দুটি মোটরসাইকেল ও একটি আলমসাধু জব্দ করে থানায় নিয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এসএ/