জবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, ১লা মার্চ ২০২৩


জবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ
জবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতায় ফাউল করা নিয়ে দুই দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাথে লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলা চলাকালীন এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে দুই বিভাগের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।


মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেরানীগঞ্জের খেলার মাঠে প্রথম দফায় এবং খেলা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খেলা চলাকালীন সময়ে বাংলা বিভাগের ৭ নাম্বার জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় সাকিব লোকপ্রশাসন বিভাগের মাসুদকে ট্যাকেলের সময় ফাউল হয়। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে মাসুদ সাকিবকে মারতে থাকে। পরে বাংলা বিভাগ ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সময় দুই বিভাগের শিক্ষক ও খেলা পরিচালনাকারী মীমাংসা করে দেয়।


পরবর্তীতে খেলা শেষে বাংলা বিভাগের বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে পৌঁছালে লোকপ্রশাসন বিভাগের মাসুদ ও তার বিভাগ ও বাইরের বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাসে উঠে বাংলা বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তাসহ টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে ছেলেদের উপর এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।


এবিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জয়ী বলেন, বাস মেইন গেটে আসার পরে একটা ভাই আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে যেতে বলে আর বাসের দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর সামি ভাইকে, জুনাইদ কে উনি মারতে শুরু করে। তারপর বাসের নিচে নিয়ে গিয়েও মারধর শুরু করে।


আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, ১৫তম আবর্তনের মাহমুদুল হক সামি, তুষার মাহমুদ, তরিকুল ইসলাম, হারুন অর-রশিদ। ১৬তম আবর্তনের জুনাইদ রায়িন, সাকিব আল হাসান। মেয়েদের মধ্যে হেনস্তার শিকার হয়েছেন জই মনি, আফসানা মিমি, তাশজির আক্তার, জয়ি মনি, এহসানুন নাহার, আফসানা মিমি, শর্মিলা আক্তার, রিপা মনি, তমা রানিসহ আরও কয়েকজন।


এনিয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস এর মাধ্যমে ফুটবল টিমের ম্যানেজার ড. রাজিব মণ্ডল উপাচার্য বরাবর অভিযোগ জমা দেন।


অভিযোগ পত্রে বলা হয়, কেরানীগঞ্জ নতুন ক্যাম্পাসের মাঠে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়ারদের দ্বারা সংগঠিত হলেও তা সেখানেই মীমাংসা করা হয়। কিন্তু খেলা শেষে বাংলা বিভাগ জয়ী হয়ে ঢাকা ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় ক্যাম্পাসের মূল ফটকে বাস আটকে অতর্কিতভাবে রড ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালানো হয়। এমনকি ছাত্রীদের অত্যন্ত হীনভাষা ও নোংরা গালিগালাজ করে অপদস্থ করা হয় ও বাস থেকে টেনে হিঁচড়ে নামানো হয়। লোকপ্রশাসন বিভাগের ১২তম ব্যাচের ছাত্র মাসুদ রানার নেতৃত্বে, ১২তম ব্যাচের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্র এম আই মারুফসহ আরো অনেকে বাংলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা চালায় এবং এতে বাংলা বিভাগের প্রায় ১৩ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।


এবিষয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, "খেলা নিয়ে আমরা সহিংসতা চাই না। শান্তিপূর্ণ খেলা চাই। আর আজকের এবিষয়ে আমরা উপাচার্য বরাবর অভিযোগ জমা দিয়েছি। আশা করছি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার করা হবে।


এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লোকপ্রশাসন বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।


অভিযোগের বিষয়ে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. নিউটন হাওলাদার বলেন, “এ ঘটনায় দুইটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”


এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, 'ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে দুই দলের অভিযোগ এসেছে। প্রক্টর বডি কে বলে দিয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে। বিষয়টি ভালভাবে দেখা হবে।'