গাছ লাগালে, যত্ন নিলে পাঁচ নাম্বার পাবে শিক্ষার্থীরা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:০২ অপরাহ্ন, ২৮শে মে ২০২৫

বৃষ্টির দিনে যখন অন্যরা জানালার পাশে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন, তখন গাছ লাগাতে কাস্তে-কোদাল হাতে মাঠে নেমেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পরিবেশবান্ধব এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিশালের এই বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল পদক পেলেন দুই গুণী ব্যক্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মো. তারিকুল ইসলামের উদ্যোগে গাছ লাগানো কার্যক্রমকে যুক্ত করা হয়েছে একেবারে পাঠ্য কার্যক্রমের অংশ হিসেবে। শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্টে বলা হয়েছে, গাছ লাগাতে হবে, পরিচর্যা করতে হবে, আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। এই কাজ করলেই মিলবে পাঁচ নম্বর।
পরিবেশ রক্ষায় যখন সারা দেশে গাছ কেটে তৈরি হচ্ছে কংক্রিটের নগর, তখন ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। দুই বছর আগের লাগানো গাছে এখন ফুটছে রঙিন ফুল। আম গাছে এসেছে মুকুল, পেয়ারা গাছে ধরেছে ফল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাঙ্গণে চোখে পড়ে কৃষ্ণচূড়া, আমলকী, নারকেলসহ নানা ধরনের গাছ। যার বেশির ভাগই লাগিয়েছেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বৃষ্টির দিন মানেই গাছ লাগানোর উৎসব। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এমন ব্যতিক্রমধর্মী এসাইনমেন্ট আগে কখনও করেননি। কাদা মাটিতে নেমে গাছ লাগানো, যত্ন নেওয়া এখন তাদের রুটিনের অংশ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি একসময় ছিল নির্জন ও অনুর্বর। এখন সবুজে ছেয়ে উঠছে পুরো ক্যাম্পাস। বিদ্রোহী হলের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য গাছ। নতুন গাছে প্রথমবারের মতো ফল দেখে আবেগে আপ্লুত অনেক শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন
কেউ কেউ বলছেন, ‘আমাদের খাতা-কলমের এসাইনমেন্ট একদিন হারিয়ে যাবে। কিন্তু এই গাছ রয়ে যাবে স্মৃতির পাতায়। সমাবর্তনের দিন প্রিয়জনকে আমরা কৃষ্ণচূড়া উপহার দেব এই স্বপ্ন আমরা বুনে যাচ্ছি।’
শিক্ষক তারিকুল ইসলামও হাত গুটিয়ে বসে থাকেন না। শিক্ষার্থীদের মতোই অংশ নেন বৃক্ষরোপণে। নিয়মিত খোঁজ রাখেন গাছগুলোর। বলেন, ‘সবুজ ক্যাম্পাস গড়তে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু পড়ালেখা নয়, প্রকৃতির প্রতিও আমাদের দায় আছে।’
এসডি/