নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সভা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:০১ পূর্বাহ্ন, ৭ই মার্চ ২০২৩


নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সভা
নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সভা। ছবি: জনবাণী

দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যোগে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


সোমবার (৬ মার্চ) সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। 


চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জ’র ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল মো. আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. বদিউল আলম ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’র উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ। 


এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস’র জয়েন্ট কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁঞা, চিটাগাং চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চেম্বার পরিচালক এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সহ- সভাপতি এ. এম. মাহবুব চৌধুরী, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, ক্যাব’র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার সাবেরী, মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, পাহাড়তলী ব্যবসায়ী সমিতির জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর দোকান মালিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আলম, মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশন’র আবুল কাশেম, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন’র সভাপতি মাহবুব রানা, মিমি সুপার মার্কেট’র সভাপতি জয়নাল আবেদিন কাঞ্চন, চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম মহিউদ্দিন (মুহিম) বক্তব্য রাখেন। 


এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 



প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, একটি দেশ ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও আমলা এই তিন চাকার সমন্বয়ে চলে। কিন্তু এই তিনের মধ্যে সমন্বয় না হলে আমরা বিপদে পড়ে যাব। তাই এই তিন চাকার মধ্যে সমন্বয় জরুরী। রমজান মাসকে ঘিরে অনেকে অতি মুনাফা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্যের মাধ্যমে বাজার অস্থিতিশীল করতে চায়। যারা এ ধরণের কার্যক্রমে লিপ্ত হবে কিংবা কৃত্রিম সংকট তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে প্রশাসন। এক্ষেত্রে কোন ধরণের তদবির বা ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। 


চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাপ্লাইচেইন ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দৃঢ়তায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য হ্রাসকৃত মূল্যে ভোগ্যপণ্য বিতরণ কর্মসূচি এবং সকল ভোক্তাদের জন্য দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করতে আমদানিতে শুল্ক হ্রাস ও অব্যাহতিসহ নানামূখী কারণে রমজান ও ঈদ কেন্দ্রিক সাপ্লাইচেইন নির্বিঘ্ন রয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ের সকল উদ্যোগে চিটাগাং চেম্বার সরকারের সাথে একযোগে কাজ করে এসেছে এবং ভবিষ্যতে তা অব্যাহত থাকবে বলে অঙ্গীকার করে বলেন আমরা ব্যবসা করবো তবে অবশ্যই সাপ্লাইচেইন ঠিক রাখবো যাতে করে ভোক্তাদের কোন অসুবিধা না হয়। তাই কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে, সকল ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের উৎসব কেন্দ্রিক ছাড় দেয়ার নজির স্থাপন করার আহবান জানান চেম্বার সভাপতি। 


বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন-রমজান ও ঈদকে ঘিরে অবনতি হয় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি। তাই আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নির্বিঘ্ন রাখতে আমরা মনিটরিং বাড়িয়ে দিব। পাশাপাশি প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনে সাধারণ জনগণের স্বার্থে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে আইন-শৃংখলা বাহিনী। 


ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় উল্লেখ করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ’র ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, রমজান পবিত্র মাস। তাই নৈতিকতার দিক বিবেচনা করে সীমিত লাভ করে পণ্য বিক্রি ও ভেজালরোধ এবং কৃত্রিম সংকট না করে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি। আজকের সভার সিদ্ধান্তসমূহ বিভিন্ন ট্রেডবডির নেতৃবৃন্দকে তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জানানোর আহবান জানিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. বদিউল আলম বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় ও মনিটরিং না থাকায় আমরা এ ধরণের সভা করছি। ব্যবসায়ীরা যদি সচেতন হয় তাহলে প্রশাসনের কঠোরতা প্রয়োজন হয় না। তবে যারা অসাধু উপায় অবলম্বন করলে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হবে। 


জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’র উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন-অনেক ক্ষেত্রে পাইকারী থেকে খুচরা পর্যন্ত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা কোন ভাউচার দেখাতে পারে না। ফলে ইচ্ছামত দাম বৃদ্ধি করে তারা। তাই ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার ছাড়া যারা অতি মুনাফার লোভে ব্যবসা পরিচালনা করবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।