জীবনের শেষ ইচ্ছে নতুন ঘর পেলেন হতদরিদ্র বৃদ্ধা রামু
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, ১২ই মার্চ ২০২৩
সকলের জীবনেই ইচ্ছে থাকে নিজের একটা সাজানো-গুছানো ঘর হবে। সেই ঘরে মাথা গুজে পার করে দিবে শেষ বয়সের একাকী জীবন। বর্তমান যুগেও ঘরের অভাবে দীর্ঘ বছর সময় কেটেছে অপরিসীম কষ্টে ও অসহায়ত্বে। ছেলে-মেয়ে থাকা সত্বেও দীর্ঘ বিশ বছর যাবৎ বিচ্ছিন্ন পরিবার পরিজনের সাথে। খেয়ে না খেয়ে পার করেছেন জীবনটা। বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুর পূর্বে সাধ জেগেছিলো নিজের একটা নতুন ঘর হবে। সেখানে গ্রীষ্মের প্রখরতা থেকে মুক্তি পাবেন, তীব্র বর্ষণে মাথা গুজবেন। সেই আশায় দশবছর ধরে বিভিন্ন জনের দুয়ারে গিয়েছেন সাহায্যের আশায়, সকলেই তাকে ফিরিয়েছেন শূন্য হাতে।
স্থানীয় রাসেল নামক ছেলের নজরে আসলে তার হৃদয়ে গভীরভাগে দাগ কাটে বৃদ্ধের অসহায়ত্বের প্রতিচ্ছবি। একক প্রচেষ্টায় ঘর তৈরির অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব নয়, তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে দিলে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়ায়। সপ্তাহের ব্যবধানে জোগাড় হয়ে যায় গৃহনির্মাণের সমস্ত টাকা। মিস্ত্রি এনে দ্রুত শুরু হয় গৃহনির্মাণ কাজ। বলছিলাম কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ভূবনঘর গ্রামের অসহায় বৃদ্ধ রামু মিয়ার কথা।
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে অসহায় বৃদ্ধ রামু মিয়া জনবাণী’কে বলেন, আমার জীবনের শেষ ইচ্ছে নতুন একটা ঘর তুলবো, সেই ঘরে ঘুমাতে পারবো। অন্য কোনো ইচ্ছে নেই আমার। অনেক দিন ভালো খাবার খাইনা। শেষ কবে খেয়েছি তাও ভুলে গেছি। আল্লাহর দরবারে লক্ষকোটি শুকরিয়া, নাতি রাসেলের কারণে যারা আমার শেষ ইচ্ছে পূরণ করছে আল্লাহ তাদের নেক হায়াত দান করুক। এখন আর আমাকে বৃষ্টি ভিজতে হবেনা। দশবছর অনেক কষ্ট করেছি ঘরটা তোলার আশায়,কেউ সাহায্য করবে দূরে থাক আশ্বাস পর্যন্ত দেয়নি।
গৃহটি নির্মাণের উদ্যোক্তা রাসেল জনবাণীকে বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রামু নানাকে চোখে পড়লে তিনি তার কষ্টের কথাগুলো বলেন। তখনই মনে সাধ জাগলো নানার জন্য কিছু একটা করতে হবে। তারপর ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছি। দ্রুত দেশ ও প্রবাস থেকে সকলে সাহায্য করেছেন। রামু নানার ঘর তৈরী করে দিতে পেরে আমরা সকলেই খুব খুশি।