পুলিশের ধাওয়ায় চোর উঠলো টিনের চালে, নামালো ফায়ার সার্ভিস


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, ৩১শে মার্চ ২০২৩


পুলিশের ধাওয়ায় চোর উঠলো টিনের চালে, নামালো ফায়ার সার্ভিস
ছবি: জনবাণী

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আন্ত:জেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের এক সদস্য উঠে যায় বসতঘরের টিনের চালে। সেখানে উঠে এক টুকরো টিন নিজের গলায় ধরে হুমকি দেন আত্মহত্যার। তাকে কেউ ধরতে গেলে নিজের গলা কেটে ফেলবেন বলে জানান। স্থানীয় লোকজন বিভিন্নভাবে বুঝিয়েও নামাতে না পেরে পরে তাকে উদ্ধার করতে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিস। এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের যৌথ চেষ্টায় তাকে নামিয়ে আনা হয়েছে। এমনই এক ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।


গত সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার পৌর-সদরের চালিয়াগোপ গ্রামে।


৪০ বছর বয়সী রিটন মিয়া আন্ত:জেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার চালিয়াগোপ গ্রামের বাসিন্দা মুর্শিদ উদ্দিনের ছেলে। তার নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা, কটিয়াদী মডেল থানা ও পাকুন্দিয়া থানায় ৮/৯ টি মটরসাইকেল চুরির মামলা রয়েছে।


পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান ঘটনা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রিটন মিয়ার নামে জেলার বিভিন্ন থানায় মোটরসাইকেল চুরির বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে ২৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ মডেল থানার একটি মামলায় তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। সে মামলায় তাকে ধরতে সদর থানার পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সদর থানা পুলিশকে সহায়তা করতে পাকুন্দিয়ায় থানা পুলিশও সেখানে উপস্থিত হয়। বিষয়টি আচ করতে পেরে সে বসতঘরের টিনের চালে উঠে বসে। এ সময় পুলিশ তাকে নামতে বললে একটা টিনের টুকরা নিজের গলায় ধরে আত্মহত্যার হুমকি দেন। উপস্থিত স্থানীয় ব্যক্তিরা বিভিন্নভাবে তাকে বুঝিয়েও নামাতে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিস। পরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের যৌথ চেষ্টায় তাকে নামিয়ে আনা হয়।  সেখান থেকে নামিয়ে তাকে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। 


তিনি আরও জানান, রিটনকে এর আগেও যতবার পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গিয়েছে ততবারই সে নানান অভিনয় করেছে। এর আগে তাকে ধরতে গেলে সে পানির বোতল হাতে নিয়ে জানান এর মধ্যে বিষ মেশানো আছে। তাকে ধরতে গেলে এই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে। তাকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেছে সে বোতলে বিষ মেশানো ছিল না।


পাকুন্দিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মুজিবুর রহমান জানান, পুলিশ খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে গিয়ে পুলিশের সাথে যুক্ত হয়ে অভিযান চালিয়ে রিটনকে টিনের চাল থেকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়।


ভিডিওটির বিষয়ে  কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদকে ফোন করা হলে তিনিও হাসতে হাসতে জানান, এই চোরের প্রত্যেকটি কাহিনীই ব্যাপক বিনোদনের। তার নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি জানান, তার অভিনয় দেখে পুলিশ সদস্যরাও অনেক হাসাহাসি করেছে। সোমবার বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।