এবার সৈকতে ভেসে এল বর্জ্য


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, ১লা এপ্রিল ২০২৩


এবার সৈকতে ভেসে এল বর্জ্য
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক, ছেঁড়া জাল, স্যান্ডেল ও রশি বর্জ্য ভেসে এসেছে

এবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক, ছেঁড়া জাল, স্যান্ডেল ও রশিসহ নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে এসেছে। যা বালিয়াড়ির কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। সমুদ্র নিম্ন চাপের কারণে এসব বর্জ্য ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যে এসব বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।


বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাতের জোয়ের সময় এসব বর্জ্য ভেসে আসার সত্যতা নিশ্চিত করেছে সৈকতে জেলা প্রশাসনের বীচ কর্মী বেলাল হোসেন।


তিনি জানান, রাতের জোয়ের পর শুক্রবার সকালে এসব বর্জ্য ভেসে আসতে দেখা গেছে।


সৈকতের কবিতা চত্বর পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত অনুমানিক আড়াই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বালিয়াড়িতে দেখা মিলেছে এসব বর্জ্য। যার বেশিভাগ প্লাস্টিকের বোতল ও অন্যান্য সামগ্রী। যার সাথে ছেঁড়া জাল, রশি, কাঁচের বোতল, গাছের গুড়ি, স্যান্ডেল সহ অন্যান্য বর্জ্য রয়েছে।


সৈকতের লাইফ গার্ডকর্মী সৈয়দ নুর জানান, বুধবার অসংখ্য মৃত জেলিফিল, বৃহস্পতিবার ২ টি মৃত ইরাবতি ডলফিল ভেসে আসার পর ব্যাপক হারে বর্জ্য ভেসে এল। যার কারণে বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা বর্জ্যে সৌন্দর্যহীন হয়ে পড়েছে সৈকত। একই সঙ্গে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ। যা দেখে বিব্রত হচ্ছে পর্যটকরা।


বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্স ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানিয়েছেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে কবিতা চত্বর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় নানা ধরনের সামুদ্রিক বর্জ্য ভেসে আসে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজার সৈকতের দরিয়ানগর হতে মহেশখালির বিভিন্ন দ্বীপ সহ সোনাদিয়া দ্বীপে একই বর্জ্য ভেসে এসেছিল।


তিনি বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনা  সমুদ্রে নিম্নচাপ, বয়ুপ্রবাহ, পানির ঘূর্ণন (এডি), সমুদ্রের পানির গতি প্রবাহ সহ সমুদ্র পৃষ্ঠের ধরন উপর ভিত্তি করে সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ভাসমান প্লাস্টিক সহ ও অন্যান্য বর্জ্য জমা হয়। উল্লখ্য যে  গত কয়েকদিন ধরে আমরা বঙ্গপোসাগরে একটি ছোট আকারের নিম্মচাপ লক্ষ্য করেছি। এসব নিম্ন চাপে জোয়ারের সময় সমুদ্র উপরি পৃষ্ঠের পানি অতি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে  ফুলে উঠে এবং ঘুর্ণনের ফলে সমুদ্রের ভাসমান বর্জ্য একসাথে জমা হয়ে ভেসে আসে সমুদ্র সৈকতে। এসব কক্সবাজার সমুদ্র কুলে অবস্থিত বিভিন্ন লতা, গুল্ম, ও ম্যান গ্রোভের সাথে আটকা পরে।  এটি টেরেসস্ট্রিয়াল মাইক্রোপ্লাস্টিক এর উৎসে পরিণত হয়েছে।


তিনি অনিতিবিলম্বে এই বর্জ্য অপসারণ না হলে সৃস্ট মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারনে সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্য হুমকির  মুখে পরবে এবং মানুষের জন্য বিশাল স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারন হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন।


কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন, এসব বর্জ্য অপসারণের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে এসব অপসারণ করা হবে।


উল্লেখ্য, এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২ টি মৃত ইরাবতি ডলফিন, বুধবার (২৯ মার্চ), গত বছরের ৩ ডিসেম্বর, ১১ নভেম্বর ও অগাস্ট মাসের শুরুতে দুই দফায় অসংখ্য মরা জেলিফিশ ভেসে এসেছিলো। একইভাবে গত বছর ৩ দফায় ভেসেছে এসেছে ৪ টি নানা প্রজাতির ডলফিন।