রোজায় বেড়ার ঐতিহ্যবাহী ঘোল-মাঠা বিক্রির চাহিদা বেড়েছে


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:০৮ অপরাহ্ন, ৩রা এপ্রিল ২০২৩


রোজায় বেড়ার ঐতিহ্যবাহী ঘোল-মাঠা বিক্রির চাহিদা বেড়েছে
ছবি: দৈনিক জনবাণী

উপমহাদেশে আবহমান খাদ্য সংস্কৃতিতে ঘোল-মাঠার এক চিরন্তন আবেদন রয়েছে। সারা বছরই মানুষের কাছে একদিকে যেমন হজম সহায়ক অন্য দিকে প্রশান্তি দায়ক ঠান্ঠা পানীয় হিসেবে ঘোল-মাঠা খুব জনপ্রিয়। তবে পাবনার বেড়া উপজেলার মাঠার চাহিদা এমনিতে বেশি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাট-বাজার গুলোতে মানুষ আসে মাঠা কেনার জন্য।


রমজান মাসে ইফতারিতে মাঠা যেন এক অনন্য নাম। উপজেলার অধিকাংশ মানুষ র্দীঘকাল ধরে শরবতের পরিবর্তে মাঠাকে প্রাধাণ্য দিয়ে আসছেন। দেশের অন্য এলাকার চেয়ে বেড়ার মাঠা স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। মূলত এটি ঘোল ছাড়া আর কিছু নয়। স্থানীয় ভাবে এই ঘোল মাঠা নামে পরিচিত। এ উপজেলার মানুষের ধারণা রমজান মাসে নিরাপদ পানীয় হিসেবে শরবতের পরিবর্তে মাঠা আরো উপাদেয়।


আমরা জানি ঘোল-মাঠা তৈরী হয় গরুর দুধ থেকে। আর দুগ্ধ ভান্ডার সমৃদ্ধ বেড়া উপজেলার রয়েছে আলাদা সুনাম। যার ফলে এখানে ভালো মাঠা তৈরী হয়। এক্ষেত্রে মাঠা তৈরীর কারিগরদেরও রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। উপজেলার বেশ কয়েকজন ঘোষ মাঠা তৈরী করলেও সবার শীর্ষে রয়েছেন নিখিল ঘোষের নাম। প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বেড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠার চাহিদা মিটিয়ে আসছেন।


নিখিল ঘোষের বাড়ি বেড়া উপজেলার পেচাকোলা গ্রামে। নিজ বাড়িতে মাঠা তৈরি করে পেচাকোলা বাজারে নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। সাধারণত দুপুর ৩টার দিকে তিনি ১৫-২০ মণ মাঠা নিয়ে বাজারে বসার সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায় ক্রেতাদের মাঠা কেনা, অন্য ঘোষরা একটু দেরিতে এলেও তাদের অপেক্ষা করতে হয় কখন নিখিল ঘোষের মাঠা শেষ হওয়ার পরে শুরু হবে তাদের মাঠা বিক্রি। এমন মাঠা তৈরির কারিগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৫-৩০ জন থাকলেও এখন হাতে গোনা ১০-১৫ জন রয়েছেন।


উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের স্থানীয় সমাজ সেবক আজিম উদ্দিন সরদার বলেন, দীর্ঘকাল থেকে ঘোল-মাঠা জনপ্রিয় তরল খাদ্য হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে বেড়ার মাঠার আলাদা সুনাম রয়েছে। ইফতারে বরফ কুঁচির সঙ্গে এক গ্লাস মাঠা যেন মুহুর্তের মধ্যেই স্বর্গীয় তৃপ্তি এনে দেয় রোজাদারদের মনে।


পেচাকোলা গ্রামের ইউপি সদস্য সিল্টু শেখ বলেন, অতিতে মানুষের মধ্যে মাঠা খাওয়ার প্রবণতা বেশি ছিল। কিন্তু এখন ইচ্ছে করলেই কর্ম ব্যস্ততায় অনেকেই ঘোল-মাঠা খাওয়ার সুযোগ পান না। তবে রমজান মাসে সেই সুযোগ অধিকাংশ মানুষের হাতের নাগালে আসে।