দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, পঞ্চগড়ে সপ্তাহজুড়ে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, পঞ্চগড়ে সপ্তাহজুড়ে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ

মোঃ কামরুল ইসলাম কামু ,পঞ্চগড়: দেশের  উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সপ্তাহজুড়ে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। যতই দিন যাচ্ছে ততই শীতের তব্রতা প্রকট হচ্ছে। পৌষের শীতে হিমেল বাতাসে জবু থবু অবস্থায় দূর্ভোগে দিন কাটছে ছিন্নমুল ও নি¤œ আয়ের মানুষেরা। বিশেষ করে হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে যাচ্ছে জনজীবন। দিনের বেলায় কুয়াশা না থাকলেও হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ার কারণে প্রচন্ড শীত অনুভুত হচ্ছে। শীত প্রবন এই জেলায় গত দুই  সপ্তাহ জুড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ৮ থেকে ৯ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। 

শুক্রবার সকাল ছয়টায় ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি এবং সকাল নয়টায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রী রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। গতকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমে গিয়ে ২৪ থেকে ২৫ ডিগ্রীর ঘরে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রী।  

সরেজমিনে পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা যায় ভোর থেকে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত  ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারদিক। তখন কুয়াশার কারনে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। সন্ধ্যা থেকে সকাল দশাটা পর্যন্ত শীত নিবারনের জন্য আগুন পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের । কুয়াশার সাথে ঠান্ডা বাতাস শীতের তিব্রতা বাড়িয়ে দেয়। সূর্য উঠলেই ধীরে ধীরে কুয়াশা কেটে যায় তবে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঝলমলে কুয়াশামিশ্রিত রোদ উঠলেও উত্তাপ ছড়ায় না। এতে  শীতের পোশাক ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যায়না। ভর দুপুরেও শীতের পোষাক মুড়িয়ে চলাফেরা করতে হয় পঞ্চগড়ে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের তীব্রতা সামান্য বেড়ে যায় কিন্ত বিকেল গড়াতেই তাপমাত্রা কমে গিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে যায় শুরু হয়  শীতের তীব্রতা।  রাতে কনকনে বাতাসের সাথে প্রচন্ড শীত। আবার ভোররাত থেকে শুরু হয় কুয়াশা। 

নিম্ন আয়ের মানুষের দূর্ভোগও দিন দিন বাড়ছে। এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা কষ্টে আছেন। হাসপাতালগুলোতে শীত ও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদিকে গত বছরে শীতকালের পৌষের এই সময়ে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বয়ে গিয়েছিল পঞ্চগড়। কিন্তু এবার মৃদু শৈত্য প্রবাহ চলছে পঞ্চগড়ের আবহাওয়ায়।

সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান জানান, হাসপাতালগুলোতে শীত ও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসকরা পচাবাসী খাবার পরিহার ও গরম কাপড় ও মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছি। দিনের বেলা কুয়াশা না পড়ায় এই শীতে কৃষিতে এখনো কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শামীম।

পঞ্চগড় জেলা পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তোহিদুল বারী বাবু জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারনে ঋতু পরিক্রমাতেও পরিবর্তন এসেছে। 

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে জেলায় এ পর্যন্ত ২২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এজন আট লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে শীতবন্ত্র কিনে বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণ করছে। কাজেই শীতবস্ত্রের কোন অভাব থাকবে না। তিনি পঞ্চগড়ের শীতার্তদের জন্য সমাজের বিত্তবান ও বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেনী আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই মাঝারি শৈত্য প্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে এই জেলায়। দিনের বেলায় বাতাসের আদ্রতা ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ এবং রাতের বেলায় ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ বাতাসের আদ্রতা। এছাড়া দিনের বেলা ৩ থেকে ৫ নটিকেল মাইল এবং রাতের বেলায় ৬ থেকে ৮ নটিকেল মাইল বেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে।