শ্রীনগরে কাল বৈশাখীর তান্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা এপ্রিল ২০২৩


শ্রীনগরে কাল বৈশাখীর তান্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
কৃষি জমিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

শ্রীনগরে কাল বৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে এ অঞ্চলে বিভিন্ন কৃষি জমিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।


বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাতে দুই দফা ঝড় ও অতি বৃষ্টিপাতের ফলে বিশেষ করে আবাদি ভুট্রা ও সূর্যমূখীর জমি লন্ডভন্ড হয়েছে। এছাড়া ঝড়-বৃষ্টিতে অন্যান্য কৃষি জমিও ক্ষতির সম্মূখীন হয়। এতে ফসলের কাঙ্খিত ফলন না পাওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। 


সূত্রমতে জানা গেছে, উপজেলা এ বছর ৫০ বিঘার অধিক সূর্যমূখীর চাষ ও ১২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্রা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এছাড়া উপজেলার ভাগ্যকুল এলাকার পদ্মার চরের ভূমিতে ভুট্রার সাইলেজ (গো-খাদ্য) বাণিজ্যে প্রায় ৫০০ বিঘায় ভুট্রা ক্ষেতি করা হয়েছে। 


সরেজমি ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার আটপাড়া, বীরতারা, তন্তর, কুকুটিয়া ইউনিয়নে অনেকাংশে কাল বৈশাখীর ঝড়ে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে প্রভাবে আটপাড়া ও বীরতারায় সূর্যমূখী এবং ভুট্রা চাষীরা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হন। দেখা গেছে, আটপাড়া ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও গ্রামে সূর্যমূখীর ক্ষেতে শ্রমিকরা বাঁশের খুঁটি গেড়ে মাটিতে হেলে পড়া গাছ বেঁধে দাড় করছেন। কর্কটপাড়া ও কল্লিগাঁও বেশকিছু জমিতে ভুট্রার গাছ হেলে পড়েছে। বীরতারা কারিগর পাড়া চকে সূর্যমূখীর ক্ষেত লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এখানে অনেক জমিতে অপরিপক্ক ভুট্রাসহ গাছ হেলে পড়ায় চাষীরা দিশেহারা। ভুক্তভোগীরা জমির সবুজ ভুট্রা গাছ গো-খাদ্য হিসেবে পানির দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। খামারীরা এসব ভুট্রাগাছ কিনে নিচ্ছেন।

 

কুকুটিয়া ইউনিয়নের বিবন্দী ও পাঁচলদিয়া গ্রামের বেশকিছু আলুর জমিতে পানি জমে যায়। স্থানীয়রা পানি নিস্কাশন করে এরই মধ্যে জমিতে আলু উত্তোলন শুরু করেছেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন সবজির বাগান ও ধানের জমিতে ঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র চোখে পড়েছে। 


স্থানীয়রা জানায়, ঝড়ে সূর্যমূখী ও ভুট্রার জমির ক্ষতির পরিমান বেশী। এতে ফসলের কাঙ্খিত ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। বীরতারার আমির হোসেন জানান, তিনি ২৮ শতাংশ জমিতে সূর্যমূখীর চাষ করেছিলেন। কাল বৈশাখী ঝড়ে সূর্যমূখীর সব গাছ ভেঙ্গে গেছে। ঝড় তান্ডবে ভুট্রার চাষেও স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে তার। কর্কটপাড়ার জমির উদ্দিন বলেন, তার ভুট্রা জমির মাটিতে মিশে গেছে। বিবন্দী গ্রামের আলু চাষী মো. আলম ও আক্তার হোসেন জানান, বৃষ্টির পানিতে আলুর জমিতে পানি জমে। পানি নিস্কাষন করে আলু উত্তোলন করতে হচ্ছে। জমিতে ভিজা মাটির ফলে আলুর রং নষ্ট হচ্ছে। 


বাড়ৈগাঁও গ্রামের মো. জুনায়দে হোসেন বলেন, ১০০ শতাংশ জমিতে সূর্যমূখীর চাষ করি। ঝড়ে গাছ সব জমিতে হেলে পড়ে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে জমিতে বাঁশের খুঁটি গেড়ে হেলে পড়া গাছ এক এক করে দাড় করিয়ে বেঁধে দিচ্ছি। কয়েকদিন ধরে ৯ জন শ্রমিক একাজ করছেন। আরও ২দিন লাগবে। এতেও যদি এ চাষে কিছু তৈলবীজ পাওয়া যায়।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শান্তনা রানী জানান, কাল বৈশাখী ঝড়ে ক্ষতির পরিমান তালিকা প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কোন সহযোগীতা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রদান করা হবে।


আরএক্স/