খেজুরের রস ছাড়াই গুড় তৈরি, ৫০ মণ গুড়সহ গ্রেফতার ৭
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
রাজশাহীর বাঘায় দীর্ঘদিন ধরে চিনি দিয়ে তৈরি খেজুরের গুড় তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমন একটি চক্রের সাতজন গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের থেকে ৫০ মণ ভেজাল খেজুরের গুড়সহ ভেজাল গুড় তৈরির উপকরণ উদ্ধার করে।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, বিপিএম (বার) এসব তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঘা উপজেলার আড়ানী চকরপাড়া গ্রামে ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে ৫০ মণ ভেজাল খেজুরের গুড়সহ কারখানার মালিক ওই এলাকার মৃত আবুল হোসেন ছেলের কিব আলী (৪২), তার সহযোগী সুমন আলী (৪২), অনিক আলী পাইলট (৩০), মাসুদ রানা (৩০), বিল্পব হোসেন সাজু (২৫), মামুন আলী (২৭), বাবুকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের সকলের বাড়ি আড়ানী চকরপাড়া এলাকায়।
এসময় তাঁদের থেকে গুড় ভর্তি ৫৮ টি ক্যারেট। প্রতিটি ক্যারেটের গুড় সহ ওজন ৩৫ কেজি করে সর্বমোট ২ হাজার ৩০ কেজি। মূল্য অনুমান ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬০০ টাকা।
এসময় ১০ বস্তা চিনি, ১৮ কেজি ফিটকিরি, ২৫ কেজি চুন, ৬০০ গ্রাম ডালডা, ১ কেজি হাইড্রোজ, দুই টাতাওয়া। এসময় উদ্ধারকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ ৫ হাজার ৬৬৫ টাকা ।
পুলিশ বলেন, এই গুড় মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। গ্রেপ্তারের পরে পুলিশ সদস্যরা গ্রেপ্তার কৃতদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমরা এই গুড় তৈরি করেছ। এই গুড় তোমরা খেয়ে দেখাও। কিন্তু গ্রেপ্তার কৃতদের মধ্যে কেউ এই গুড় খেয়ে দেখায়নি। এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান- বাজারে ভেজাল গুড় থাকতে পারে।
এগুলো বিএসটিআই, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহ সরকারের অন্য সংস্থা গুলো ভেজাল বিরোধী অভিযান চালাবে। তাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। আমাদের জানালে আমরা তাঁদের সহযোগিতা করবো।
পুলিশ আরো জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান ৩ মাস যাবৎ ওই কারখানায় চিনি, চুন, হাইড্রোজ, ফিটকারি, ডালডা ও বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান মিশিয়ে ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরি করে আসছে। তাঁরা এগুলোরাজধানীঢাকা’সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজার জাত করে থাকে। গুড় তৈরির ক্ষেত্রে তাঁরা যে সকল রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে সেগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও জটিল রোগের সৃষ্টিকরে।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন ,রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, বিপিএম (বার), রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু সালেহ মো. আশরাফুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) সনাতন চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অলক বিশ্বাস, সহকারী পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) রুবেল আহমেদ ও সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) নিয়াজ মেহেদী প্রমুখ।
এসএ/