বিজিবি-চোরাকারবারি সংঘর্ষ: নিহত ব্যক্তির মরদেহ হস্তান্তর


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:১৭ পূর্বাহ্ন, ১০ই এপ্রিল ২০২৩


বিজিবি-চোরাকারবারি সংঘর্ষ: নিহত ব্যক্তির মরদেহ হস্তান্তর
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল

কক্সবাজারের রামুতে বিজিবির সাথে গরু চোরাকারবারিদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ব্যক্তির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।


রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউপি'র ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) মোহাম্মদ আলী জানান, রবিবার (৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২ টায় নিহতের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের সাথে তিনি গ্রহণ করেছেন।


নিহত আব্দুর জব্বার (৪০) রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কাউয়ারখোপ এলাকার মৃত জাকের আহমদের ছেলে।


কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রোববার বেলা ১২ টায় নিহত আব্দুর জব্বারের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে মরদেহটি বিজিবির সদস্যরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার কাছে হস্তান্তর করেছেন। এরপর মরদেহ এলাকায় নিয়ে গিয়ে স্বজনদের তুলে দেওয়া হয়েছে।


বিকালে আছরের নামাজ শেষে নিহতকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় এ ইউপি সদস্য।


এর আগে রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টা ১৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ রিপন চৌধুরী জানিয়েছেন, রামুর ঘটনায় নিহতের মরদেহ সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে আনা হয়।


তিনি জানান, এ ঘটনায় আহত বিজিবি হাবিলদার মো. মোহাইমিনুল ইসলাম, নায়েক মো. লুৎফর রহমান ও নায়েক মো. আবুল কালামকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।


রবিবার (৩ এপ্রিল) বেলা ১২ টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি টান্টু সাহা জানিয়েছেন, রামুতে বিজিবির সাথে গরু চোরাকারবারিদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হওয়ার খবর তিনি শুনেছেন। মরদেহটি নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে ছিল বলে জেনেছেন।


একই সময় নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এজেডএম সেলিম জানিয়েছেন, রবিবার ভোরে মরদেহটি বিজিবি নিয়ে গেছে। সম্ভবত ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হতে পারে।


বিষয়টি নিয়ে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিমের সাথে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


তবে রবিবার সকালে বিজিবির সদর দপ্তর থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) মো. শরীফুল ইসলামের পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়েছে শনিবার রাতে সীমান্তের চোরাই গরু জব্দ করে টহল দল পায়ে হেঁটে ফেরার সময় কাউয়ারখোপ এলাকায় সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী, দুষ্কৃতিকারী ও স্থানীয় সহযোগী প্রায় ২০০ হতে ৩০০ জন লোক দেশীয় অস্ত্র, লাঠিশোঠা ও ইটপাটকেলসহ বিজিবি টহল দলের উপর অতর্কিত হামলা করে। এসময় বিজিবির ৩ সদস্য গুরুতর আহত হন। আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


বার্তাটিতে বলা হয়, এ সময় টহল দল সরকারী জানমাল রক্ষার্থে এবং আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে বাধ্য হলে একজন চোরাকারবারি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি  দেশীয় একনলা বন্দুক, ১টি ক্রীচ ও ১টি দা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে বার্তা।


এদিকে, রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রামু থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসাইন জানিয়েছেন, শনিবার রাতে কাউয়ারখোপে বিজিবির সাথে চোরাকারবারিদের সংঘর্ষের খবর শুনেছেন। নানাভাবে হতাহতের খবর শুনা গেলেও এ পর্যন্ত হতাহতের কোন নিশ্চিত তথ্য তার কাছে নেই।


শনিবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারখোপ এলাকায় বিজিবির সাথে গরু চোরাকারবারিদের সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে।


রাতে রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামসুল আলম জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা ৬টি গরু জব্দ করে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। জব্দ গরুগুলো নিয়ে আসার সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত লোকজন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। পাচারকারীরা বিজিবির সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে বিজিবির সদস্যরা আহত হন। এক পর্যায়ে বিজিবি সদস্যরা গুলি ছোড়ে। এতে স্থানীয় নির্মাণ সামগ্রী দোকান কর্মচারী ঘটনাস্থলে নিহত হন। নিহতের নাম আব্দুর জব্বার, তিনি রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারখোপ এলাকার মৃত জাকের আহমদের ছেলে বলে জানান তিনি।


আরএক্স/