চুয়াডাঙ্গায় টানা ৮ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, জনজীবন অতিষ্ঠ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:১২ পূর্বাহ্ন, ১০ই এপ্রিল ২০২৩
টানা ৮ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করায় চুয়াডাঙ্গার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। মাঝারি তাপদাহে জেলার খেটে খাওয়া রোজাদাররা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
রবিবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জেলার উপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আরও কিছুদিন অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছেনচুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান।
এদিকে তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে গা এলিয়ে দিচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচ- তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অনেক পথচারিদের ছাতা মাথায় দিয়ে চলাচল করছেন। এছাড়া গরমে সদর হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হাসফাস অবস্থা। প্রত্যেক ওয়ার্ডের বেশির ভাগ ফ্যান আস্তে ঘোরার কারণে অনেকে হাত পাখা কিংবা টেবিল ফ্যান কিনতে দেখা গেছে।
শহরের রিকসা চালক আসলাম উদ্দিন বলেন, রিকসা চালালেও আল্লাহপাক সব কটি রোজা রাখার তৌফিক দিয়েছেন। রোজার শুরুতে কিছু মনে না হলেও ৭/৮ দিন খুব কষ্ট হচ্ছে রিকসা চালাতে। দুপুর হলেই ক্লান্তিতে রিকসার প্যাডেল আর চলছেনা। বিকেলের আগেই বাড়িতে ফিরে যেতে হচ্ছে। এমন গরম পড়লে রোজা রেখে রিকসা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার খুদিয়াখালি গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম অনিক বলেন, এখন ভূট্টা কাটার সময়। তিন দিন যাবত নিজের ভুট্টা ক্ষেতে ভুট্টা কাছটি। প্রচণ্ড রোদের কারণে গরমে আজ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছি। অনেক রোজাদার কৃষক মাঠে কাজ করছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে কাজ করায় দুস্কর হয়ে পড়ছে তাদের। নির্ধারিত সময়ের আগেই বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আব্দুল জব্বার নামে এক রোগীর স্বজনরা বলেন, গত তিনদিন হৃদরোগে আক্রাক্ত হলে আগে আমার বড় বোনকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। প্রচণ্ড গরমে সেখানে ফ্যানের বাতাস গায়েই লাগছেনা। বাধ্য হয়ে হাত পাখা কিনেছি। আবার কেউ কেউ টেবিল ফ্যান নিয়ে এসেছেন।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, আজ রোববার (০৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে শনিবার ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
ধারাবাহিকভাবে টানা ৮ দিন দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আরও কিছুদিন অব্যহত থাকবে।