১৮ বছর পর বাবাকে পেয়ে আবেগে আপ্লুত স্ত্রীসহ তিন সন্তান
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:২০ পূর্বাহ্ন, ৯ই মে ২০২৩
বাবা শব্দটি কারও কাছে বটবৃক্ষ। কারও কাছে মাথার ওপর বিশাল একটা ছাদের ন্যায় কিংবা তপ্ত রোদে এক টুকরো মেঘ। কারও কাছে বাবা মানে ঈদ, বাবা মানে পৃথিবী—কত কিছুর সঙ্গেই না আমরা এর তুলনা করতে যাই। আসলেই কি বাবার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয়! স্বাভাবিকভাবেই না। এগুলো নিছক কিছু শব্দমাত্র। বাবার তুলনা বাবা নিজেই। এ এক সংজ্ঞাহীন শব্দ।
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের সদাবরী গ্রামের সওদাগরের ছেলে আজিজুল হক বাড়ি থেকে মান অভিমান করে দীর্ঘ ১৮ বছর শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার সেনরচর ইউনিয়নের বঙ্গবাজার গ্রামে কাজ করে ঐ খানেই থাকতেন। দীর্ঘ ১৮ বছরেও বাড়ির সাথে কোন প্রকার খোঁজ খবর রাখেনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজিজুল হক (৬২) ২০০৫ সালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেননি। পরিবারের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও পাননি। এক সময় তার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু হারিয়ে যাওয়ার ১৮ বছর পর তাকে ফিরে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে বাবাকে পেয়ে স্ত্রীসহ তিন পুত্র সন্তান কান্নায় ভেঙে পড়েন কিন্ত এ কান্না ছিল বড় আনন্দের।
আজিজুল হকের ছোট ছেলে আহসান বলেন, আমার বয়স যখন ৪ তখন বাবাকে আর দেখেনি। আমার খুব ইচ্ছা ছিলো বাবাকে দেখতে চাই জীবিত বা মৃত। বাবাকে পেয়ে আমি খুব খুশি আর হারাতে দিবো না।পৃথিবীতে যার বাবা নেই তার কেহ নেই। মাও শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
২০০৫ সালের একদিন কাউকে কিছু না বলেই প্যান্ট-শার্ট পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেননি।
স্ত্রী রাশেদা বলেন, আমার স্বামী আজিজুল হক চুয়াডাঙ্গার নাম বলে বাড়ি থেকে বাহির হয় আর ফিরে আসেনি। আমি তার জন্য আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করতাম সে যেন একদিন জীবিত হয়ে আমার কাছে ফিরে আসে।
বড় ছেলে আব্দুল কাদের বলেন, দীর্ঘ বছর পর বাবাকে এভাবে ফিরে পাবো তা কখনোই ভাবিনি। খেয়ে না খেয়ে তিন ভাই মা কত রাত কেঁদেছি না খেয়ে থেকেছি এত কষ্ট জীবনে করেছি আজ বাবাকে পেয়ে সব দু:খ কষ্ট ভুলে গিয়েছি। গ্রামের জাহিদের সহযোগিতায় বাবাকে ফিরে পেয়েছি। যখন বাবাকে কাছে পেলাম তখন আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ি।