কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ: পূর্বপরিচিত শুভ-আমিন রুমাল চেপে রিকশায় তোলেন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ: পূর্বপরিচিত শুভ-আমিন রুমাল চেপে রিকশায় তোলেন

রাজধানীর লালবাগ এলাকায় আলোচিত কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মনির হোসেন ওরফে শুভকে আটক করেছে র‌্যাব। র‌্যাব জানায়, গণধর্ষণের শিকার তরুণীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে আটকে রাখা হয়। পরে তার ওপর অভিযুক্তরা নির্যাতন ও ধর্ষণ চালায়।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যাব জানিয়েছে, অভিযুক্ত শুভ বিবিএর শিক্ষার্থী। আর ওই তরুণী কি করেন? কোথায় থাকেন? সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন- বাসায় আটকে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। একই অভিযোগ তিনি পুলিশের কাছেও করেছেন। বিশেষ করে আটককৃত মনির হোসেন শুভর দিকেই তার অভিযোগের তীর।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমানে এ সংক্রান্ত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শুভর পাশাপাশি আলামিন নামের আরও এক তরুণের বিরুদ্ধেও ওই তরুণীর একই অভিযোগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আটককৃত শুভকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি- আটককৃত মনির হোসেন শুভর সঙ্গে ওই তরুণীর ১ মাস পূর্বে পরিচয় হয় তার অন্য একজন বন্ধুর মাধ্যমে। শুভর বক্তব্য অনুযায়ী তাদের মধ্যে ৫ থেকে ৬ বার দেখা হয় এবং তারা পূর্ব পরিচিত।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি টানা ৪ দিন আটকে রেখে ‘ধর্ষণের বিষয়ে শুভকে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করলে, শুভ উত্তরে জানায়- এই সময়ের মধ্যে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে তবে সেটি সুসম্পর্ক থাকায় এবং স্বেচ্ছায়।

তবে দলবেঁধে ধর্ষণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভ বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও ওই তরুণীর সঙ্গে একত্রে সময় কাটানোর বিষয়টি সে স্বীকার করেছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এমন পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তেই ‘ধর্ষণের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেলেই এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য তুলে ধরতে পারবেন। এখনও ওই তরুণী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি রয়েছেন। আমরা তার সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলার সুযোগ পাইনি।

শুভ ওই তরুণীর সঙ্গে ‘দেখা করেছে বলার মানে ‘ধর্ষণ কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে জবাবে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শুভ বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। কারণ, এখানে মেডিকেল রিপোর্টের বিষয়টি রয়েছে। সে ইতোপূর্বে ৫ থেকে ৭ বার ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করেছে। প্রত্যেকবারই তাদের মধ্যে একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হয়েছে বলেই শুভ আমাদেরকে প্রাথমিকভাবে বলেছে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে শুভ বলছে, ওই তরুণীকে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তাদের মধ্যে যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে সেটি স্বেচ্ছাতেই হয়েছে।

অভিযোগকারী ওই তরুণীর পরিবারের সঙ্গে র‌্যাব যোগাযোগ করেছে কি না? কিংবা ওই পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে কি না? অথবা, ওই তরুণীর পরিবার স্পষ্ট করে র‌্যাব বা পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেছে কি না? এসব প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাব কর্মকর্তা কমান্ডার আল মঈন বলেন, আমরা আসলে ওই নারী সঙ্গে এখনও কথা বলার সুযোগ পাইনি। কিন্তু, ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং ওই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অভিযোগকারী তরুণী এবং তার পরিবারের সঙ্গে নিশ্চয়ই এ বিষয়ে কথা বলবেন। এরপরই প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে।

ওআ/