ফুল বিক্রি করে সংসার চালান ভূমিহীন মফিজুল


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ফুল বিক্রি করে সংসার চালান ভূমিহীন মফিজুল

মফিজুল ইসলাম। বয়স আর কতো হবে ৫৫/৬০ বছর। ১৭ বছর ধরে ফুল বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। থাকার জায়গা টুকুও নাই তার।এককথায়  তিনি ভূমিহীন । আপনি  কি ’ভূমিহীন জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বলেন ‘জী ভূমিহীন’ সরকারি ঘর পাননি। না পাইনি। কেনো পাননি জানতে চাইলে তিনি হেসে হেসে  বলেন ‘ আমার তো ওটা নাই। তাছাড়া কোথায় না কোথায় ঘর দেয় ‘ঝামেলা। হাসি মুখেই সব কথা বলেন ‘ মনে হচ্ছিল কতোই না সুখি মানুষ তিনি। পাশে চক চক করছিল তার ফুলের ছোট একটি বাগান রকমারি ফুলে ভরে গেছে। হলুদ ,লাল, আর সবুজে রঙিন হয়ে আছে তার বাগানটি ।



মফিজুল ইসলাম একজন নেহাতই সরল নিরস মানুষ। দাদ্রিতা নিয়ে তার জীবনটা চললেও খুশির কমতি নেই। ফুলের ব্যবসা করে ফুলের মতোই হয়ে গেছে তার মন। কোন খাদ নেই দরিদ্র মনটায়। তার বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ গ্রামে। নয়নী বরুজ একটি স্টেশন আছে। রেলস্টেশনের পাশেই তার এই ছোট বাগান। বাগানের পাশেই তার বসবাস। রেলের জমিতে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন।

বাগানের পাশে দাঁড়াতেই সাংবাদিকে দেখে ছুটে আসেন মফিুজল ইসলাম। মুখে উচ্ছাসের হাসি। মনে হচ্ছিল তার মনে কোন বেদনা নেই। ফুলের মাঝেই যেনো তার মনের জোর লুকায়িত। কষ্ট বেদনা সব মিশে গেছে।রেলের দশ শতক জমিতেই তিনি গড়ে তোলেন রকমারি ফুলের বাগান। গ্রামের পথের ধারে চোখে পড়লেই মনে হয় ‘ একটু দাঁড়াই।



পঞ্চগড় শহর থেকে পাকা সড়কে নয়নীবরুজ যেতে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিটের সময়। রাস্তা হবে ৫/৬ কিলোমিটার। মফিজুল ইসলাম জানায় তিনি ১৭ বছর ধরে এই ফুলের ব্যবসা করে আসছেন। প্রথমদিকে সাইকেলে করে এই ফুল বিক্রি করতেন। করোনার কারনে তিনি ভীষন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত । কেনো জানতে চাইলে ‘ তিনি বলেন স্কুল-কলেজ বন্ধ তাই। করোনার আগে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে দুই্ হাজার পাঁচশত টাকা পর্যন্ত তিনি ফুল বিক্রি করতেন। এখন বিক্রি হয় এক হাজার থেকে এক হাজার দুই্ শত টাকা। তার কষ্ট হয় সংসার চালাতে। করোনা হ্রাস পাবে আর তার ফুল আগের মতো বিক্রি হবে ‘ এমন আশায় তিনি অপেক্ষা করছেন। মেয়ে ছেলে সন্তান ও স্ত্রী সহ তার সংসারে ৭ জন সদস্য। 

আপনি কি শুধু ফুলের ব্যবসা করে সংসার চালান‘ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন ‘ এই ফুল বিক্রি করেই তার সংসার নির্বাহ করতে হয়।তার এই ফুলের বাগানে রয়েছে ‘গেন্ধা, গোলাপ, ছাউলেসিয়া কেন্ডোলা সহ ৩০ জাতের ফুল। রয়েছে চায়না কলা মরিচ।মফিজুল ইসলাম প্রায় সত্তর হাজার টাকা ব্যয়ে এই বাগানটি করেছেন।

এসএ/